শঙ্কর আঢ্য। — ফাইল চিত্র।
শঙ্কর আঢ্যের একটি সংস্থার মাধ্যমেই গত ১০ বছরে এক হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হয়েছে। তদন্তে নেমে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর ওরফে ডাকুর ব্যবসায়িক বিষয়ে এমন তথ্যই জানতে পেরেছে বলে আদালতে দাবি করল ইডি। শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল শঙ্করকে। রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয় চলতি মাসের শুরুতে। শুনানিতে ইডি শঙ্করের বিষয়ে আরও নতুন তথ্য দাবি করল।
আদালতে ইডি দাবি করেছে, শঙ্করের সিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট)-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। তাদের দাবি, ‘আঢ্য ফরেক্স’-সহ চারটি সংস্থার মাধ্যমে ৩৫০ কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রায় পরিণত (কনভার্ট) করেছেন শঙ্কর। সবই ফরেক্সের মাধ্যমে হয়েছে। ইডির দাবি, গত ১০ বছরে শঙ্করের ‘এসআর আঢ্য ফিনান্স লিমিটেড’-এর মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হয়েছে। ২০১২-১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে। ঘটনাচক্রে, তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই এ সব হয়েছে।
ইডি আদালতে আরও দাবি করেছে, ৯০টি ফরেক্স সংস্থার সঙ্গে জড়িত শঙ্কর। ৬টি সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে শঙ্কর বা তাঁর স্ত্রী বা মেয়ে বা পরিবারের সদস্যদের। ওই সংস্থাগুলির মাথায় রয়েছেন শঙ্কর বা তাঁর পরিবারের লোকজন। শঙ্করের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায় টাকা আসে, বিনিময় হয়।
গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় ইডি। রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ইডি আধিকারিকেরা। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করিয়ে ইডি জানায়, ২০ হাজার কোটি টাকার বিদেশে লেনদেন হয়েছে শঙ্করের একাধিক ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে সেই টাকার যোগ থাকতে পারে বলে অনুমান ইডির। ইডির দাবি, ওই ২০ হাজার কোটির মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি জ্যোতিপ্রিয়ের। শঙ্কর অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শনিবার তাঁর ইডির হেফাজত শেষ হয়েছে। তার পর আদালতে তাঁকে হাজির করানো হয়েছিল। যদিও জামিনের আবেদন করা হয়নি শঙ্করের তরফে। ভাল চিকিৎসা পরিষেবার আবেদন জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।