বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পরের মুহূর্তের ছবি। —ফাইল চিত্র।
শতাব্দী প্রাচীন জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে তিন জনের মৃত্যুর পরে টনক নড়েছে রেল কর্তৃপক্ষের। শুক্রবার তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পূর্ব রেলের হাওড়া, মালদহ, আসানসোল ও শিয়ালদহ ডিভিশনের সব স্টেশনে পুরনো জল ট্যাঙ্কগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। সেই রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্ধমান স্টেশনের ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভেঙে পড়া জলের ট্যাঙ্কের জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে তদন্ত কমিটি। তা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘পূর্ব রেলের মধ্যে থাকা পুরনো জলের ট্যাঙ্কগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। প্ল্যাটফর্ম, স্টেশন চত্বরের সঙ্গে রেলের আবাসন এলাকায় থাকা জলাধারগুলিও দেখা হবে। বিশেষজ্ঞদের মত নিতে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।” প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, হাওড়া ডিভিশনে প্ল্যাটফর্মের উপরেই তিনটি, স্টেশন চত্বরে ১৪টি ও আবাসন এলাকায় ৩৫টির মতো পুরনো জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে। বর্ধমানের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মেও ১৯৩৫ সালে তৈরি একটি জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, ‘লেজার ফোটোমেট্রিক মেজ়ারমেন্ট সিস্টেমের’ (এলপিএমএস) মতো বা আরও আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ট্যাঙ্কের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। আইআইটি বা অন্য কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থার পরামর্শ নিতে পারে রেল। ইঞ্জিনিয়ারেরা জানিয়েছেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে ট্যাঙ্কটি কত গ্যালন জল ধারণ করতে পারবে, সে ক্ষেত্রে ট্যাঙ্কের ভিতরে ক্ষয়ের পরিমাণ কেমন হবে, কাঠামোয় কতটা চাপ পড়ছে, সেই চাপ নেওয়ার ক্ষমতা স্তম্ভগুলির আছে কি না, সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
বুধবার দুপুরে বর্ধমান স্টেশনে ১৭৪ বছরের পুরনো ট্যাঙ্ক ভেঙে জলের তোড় ও লোহার চাদরের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যান। অন্তত ৩৪ জন জখম হন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও জনা দশেক ভর্তি রয়েছেন। ছ’বছরের এক বালিকার অস্ত্রোপচার হবে। বাকিদের শীঘ্র ছেড়ে দেওয়া হবে।
এর মধ্যে রেলের তদন্তকারী দল জখম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে কথা বলে তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেছে। তদন্তকারীরা দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে বয়ান নথিভুক্ত, একাধিক রিপোর্ট সংগ্রহও করেছেন। রেলের কর্তাদের দাবি, কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত কমিটি ডিআরএম-কে (হাওড়া) রিপোর্ট জমা দেবে।