—ফাইল চিত্র।
শীতের মরসুমে কুয়াশায় দুর্ঘটনা এড়াতে দূরপাল্লার ট্রেনের দেরিতে ছোটা প্রায় রোজকার ঘটনা। ওই সমস্যা মেটাতে বছর দুয়েক আগে উত্তর রেলে ‘ফগ সেফ’ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করে রেল। এ বার পূর্ব রেলের দূরপাল্লার প্রায় সব ট্রেনে তো বটেই, ভোর এবং রাতের লোকাল ট্রেনেও ওই যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।
ঘন কুয়াশায় খারাপ দৃশ্যমানতার দরুন সিগন্যাল দেখার ক্ষেত্রে প্রায়ই সমস্যায় পড়েন ট্রেনচালকেরা। এ বার সিগন্যাল পোস্টের দূরত্ব-সহ অবস্থানের আগাম হদিস দেওয়ার জন্য সব ট্রেনেই ফগ সেফ যন্ত্র বসছে। রেলকর্তারা জানান, এর ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে, অন্ধকারে সিগন্যাল ঠাহর করতে না-পারার আশঙ্কায় ধীরে ট্রেন চালানোরও প্রয়োজন হবে না।
কতকটা বিমানের ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএসের ধাঁচে কাজ করে ওই কুয়াশা-দমন যন্ত্র। জিপিএস নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তিতে রেডিয়োর মতো ওই যন্ত্র নির্দিষ্ট সিগন্যাল পোস্ট আসার অন্তত দু’কিলোমিটার আগে চালকের কাছে তার অবস্থানের বার্তা পৌঁছে দেয়। একই সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে
দূরত্ব কতটা কমছে, তা-ও জানান দিতে থাকে। ট্রেন যাত্রা শুরু করার পরে ওই যন্ত্রে রুট নির্দিষ্ট করে দিলে সে সিগন্যালের হদিস দিতে থাকে নিজের থেকেই। প্রায় এক লক্ষ টাকার ওই যন্ত্র লেভেল ক্রসিং গেট, হোম, স্টার্টার, অ্যাডভান্স স্টার্টার থেকে ডিসট্যান্ট সিগন্যালের হদিস দেয়। সিগন্যালের রং ওই যন্ত্রে ধরা পড়ে না। সিগন্যাল পোস্টের দূরত্ব জেনে তার রং দেখে চালককে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। কর্তাদের মতে, সিগন্যালের অবস্থান আগাম জানতে পারায় গতি নিয়ন্ত্রণে চালকদের অনেক সুবিধা হয়েছে।
পূর্ব রেলে যোধপুর, পূর্বা, দানাপুর, বিভূতি, গণদেবতা, আজিমগঞ্জ এক্সপ্রেস-সহ বিভিন্ন ট্রেনে যন্ত্রটি ব্যবহৃত হচ্ছে। উত্তর ও উত্তর-মধ্য রেলের উদ্যোগে রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ দূরপাল্লার বহু ট্রেনে আগেই ওই যন্ত্র লাগানো হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কমল দেও দাস বলেন, ‘‘ওই যন্ত্র ব্যবহারের ফলে ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা অনেক বেড়েছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমেছে। চলতি মরসুমে এখনও পর্যন্ত ১২৩টি ট্রেনে ওই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।’’