সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্মেলন এ বার হবে মেদিনীপুর শহরে। ইতিমধ্যে দলের রাজ্য কমিটি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী অগস্টে সংগঠনের জেলা সম্মেলন হওয়ার কথা। অক্টোবরের গোড়ায় রাজ্য সম্মেলন হবে। তিন দিনের এই সম্মেলনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় পাঁচশো প্রতিনিধি যোগ দেবেন।
অবশ্য রাজ্য সম্মেলন মেদিনীপুর শহরের ঠিক কোথায় হবে, সেই ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি ডিওয়াইএফ জেলা নেতৃত্ব। এ নিয়ে সংগঠনের মধ্যে আলোচনা চলছে। প্রদ্যোত্ স্মৃতি সদন অর্থাত্ জেলা পরিষদ হল পাওয়া যাবে না ধরে নিয়েই এগোচ্ছেন নেতৃত্ব। মেদিনীপুর শহরে আর বড় সভাঘর নেই। বিদ্যাসাগর হলে রাজ্য সম্মেলন করতে ইচ্ছুক নন অনেকে। শহরের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে সম্মেলনের আয়োজন করা যায় কি না, সেই নিয়েও প্রাথমিক আলোচনা চলছে। ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ বলেন, ‘‘মেদিনীপুর শহরের কোথায় রাজ্য সম্মেলন হবে, তা শীঘ্রই ঠিক হবে।’’
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ডিওয়াইএফের এই রাজ্য সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলন থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ধারাবাহিক রক্তক্ষরণ বন্ধের দাওয়াই দিতে পারেন নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, সম্মেলন উপলক্ষে শহরে এক প্রকাশ্য সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। সম্মেলনের প্রতিনিধি বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও এ বার একটি নীতি নিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৯ হাজার সদস্য পিছু একজন করে প্রতিনিধি হবেন। যেমন, পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন ডিওয়াইএফের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। ফলে, এ জেলা থেকে রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি হবেন প্রায় ২৩ জন। জেলা সম্মেলনের মধ্য দিয়েই রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি-তালিকা চূড়ান্ত হবে।
কিছু ভুল-ত্রুটির জন্যই যে সংগঠন কিছুটা দুর্বল হয়েছে, তা মানেন ডিওয়াইএফের নেতৃত্ব। পাশাপাশি, তাঁদের স্বীকারোক্তি, রাজ্যে পালাবদলের জন্য বামেদের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি, আচার-আচরণ, সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও কিছু ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতার অভাবই অনুঘটকের কাজ করেছে। একাংশ যুবও বিভ্রান্ত হয়। যুব নেতৃত্বের আরও বক্তব্য, সরকার তৈরি করার সংগ্রামটাই ডিওয়াইএফের মতো যুব সংগঠনের একমাত্র কাজ নয়। রাজ্য সরকারের চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, বেকার যুবদের বাদ দিয়ে অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ, এ সবের বিরুদ্ধে প্রচার ও আন্দোলন আরও তীব্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সম্মেলনে। স্থানীয় ইস্যুর দাবিতেও প্রতিনিয়ত আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ বলেন, ‘‘মানুষকে চির কাল দাবিয়ে রাখা যায় না। অনেকে মনে করেছিলেন, পরিবর্তন হলে বামপন্থীদের থেকে ভাল সরকার হবে। এই মনে করার মধ্যে অন্যায় নেই। তবে যারা ঠকিয়েছে, তাদের যোগ্য জবাব দিতে হবে। কোনটা নাটক, কোনটা মুখোশ, আর কোনটা মুখ, এতদিনে মানুষ তা বুঝতে পারছেন।’’