জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন ডিআরডিও। —ফাইল চিত্র।
কাঁথির জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়া নিয়ে বিতর্ক চলছে। তারই মধ্যে এ বার হবে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর বিমান মহড়া (ফ্লাইট ট্রায়াল)। আগামী ১৭ থেকে ১৯ জুলাই এবং ২৪ থেকে ২৬ জুলাই দু’দফায় এই মহড়ার জন্য মৎস্যজীবীদের ৬ দিন সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীন ডিআরডিও। আগামী মার্চে এখান থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে লঞ্চিং প্যাড নির্মাণ হয়েছে। পাশে উপকূলরক্ষী বাহিনীর রেডার নির্মাণও শেষের পথে। তবে, স্থানীয়দের বাধায় সীমানা প্রাচীরের কাজ বার বার আটকেছে। তার পরে পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামকে চিঠি দিয়ে ডিআরডিও আশ্বস্ত করেছে, জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণ হবে না। ওই এলাকার সংলগ্ন খালও মৎস্যজীবীরা ব্যবহার করতে পারবেন।
দু’মাসের ‘ব্যান পিরিয়ড’ শেষে গত ১৫ জুন শুরু হয়েছে সমুদ্রে মাছ ধরার মরসুম। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই বিমান মহড়ার জন্য দু’দফায় ছ’দিন ফের সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর। এ ব্যাপারে গত ৩ জুলাই ডিআরডিও-র আইটিআর (ইন্টিগ্রেটেড টেস্টিং রেঞ্জ) অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর অব ডিরেক্টর’স শ্রাবণী ঘোষ এ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং প্রতিবেশী ওড়িশার কেন্দ্রাপড়া, বালেশ্বর এবং ভদ্রকের জেলাশাসককে চিঠি পাঠিয়েছেন।
তার পরে পূর্ব মেদিনীপুরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুমন সাহা ৪১টি খটি মৎস্যজীবী সমিতি এবং প্রতিটি ব্লকের মৎস্য সম্প্রসারক ছাড়াও জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠান। তাতে জানানো হয়েছে, ওই ছ’দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে মহড়া চলবে। এর পরে উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর গতিবিধি বেড়েছে জুনপুটে। এতে মৎস্যজীবী থেকে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ।
‘জুনপুট ভূমি রক্ষা কমিটি’র নেতা তথা স্থানীয় কাঁথি-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আমিন সোহেল বলছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিডিওকে ডেপুটেশন দিয়েছি। জীবন-জীবিকা বাঁচানোর স্বার্থে আগামী ১৫ জুলাই জুনপুট থেকে কাঁথি পর্যন্ত মশাল মিছিল হবে।’’ দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সভাপতি দেবাশিস শ্যামলের দাবি, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই মৎস্য দফতর এ ভাবে সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশ দিতে পারে না। এর ক্ষতিপূরণই বা কারা দেবে? ডিআরডিও-র লিখিত আশ্বাস নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।’’
এ প্রসঙ্গে সহ-মৎস্য অধিকর্তার বক্তব্য, ‘‘সময় কম থাকায় আমরা সবাইকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এখন মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি আপত্তি করলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’