Calcutta High Court

শিশুদের খেলার মাঠ রাজনৈতিক নেতাদের ইচ্ছামতো ব্যবহার হতে পারে না, মন্তব্য হাই কোর্টের

মানিকপুর গ্রামে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছে ওই প্রাথমিক স্কুলটি। সম্প্রতি ওই গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ ওঠে। হাই কোর্ট ওই নির্মাণ বন্ধ করে দেয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৫ ১৯:৪৪
Share:
A photograph of Calcutta High court justice Biswajit Basu

স্কুলে শিশুদের খেলার মাঠ দখল করে রাজনৈতিক নেতাদের খুশি মতো কাজ হতে পারে না, মন্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের। —ফাইল ছবি।

স্কুলে শিশুদের খেলার মাঠ দখল করে রাজনৈতিক নেতাদের খুশি মতো কাজ হতে পারে না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের মাঠে নির্মাণ নিয়ে মন্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মন্তব্য, ‘‘স্কুলের মাঠ রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করতে পারেন না। সেটি শিশুদের জন্য। সেখানে শিশুরা খেলবে তাতেই সৌর্ন্দয।’’ ওই স্কুলের মাঠে নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বসু। সেই মতো জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল এবং পুলিশ নির্দেশ কার্যকর করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে আদালতে। তা দেখে সন্তুষ্ট হয় আদালত। বিচারপতি বসুর কথায়, ‘‘দেখে ভাল লাগছে রাজনৈতিক নেতাদের হাত থেকে শিশুদের খেলার জন্য একটি মাঠ অন্তত বাঁচানো গেল।’’

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের মানিকপুর প্রাথমিক স্কুলের খেলার মাঠ দখল করে নির্মাণ হয়। অভিযোগ, ওই মাঠে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। স্কুল মাঠে নির্মাণ নিয়ে প্রতিবাদ জানান গ্রামবাসীদের একাংশ। ওই বিষয়টি নিয়ে এক অভিভাবক হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। গত বছর ১৬ ডিসেম্বর ওই নির্মাণের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ ছিল, অবিলম্বে পুলিশকে ওই নির্মাণকাজ বন্ধ করতে হবে। খেলার মাঠকে আগের অবস্থা ফিরিয়ে দিতে হবে জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলকে। বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘স্কুলের বাচ্চাদের খেলার মাঠ খুঁড়ে নির্মাণের এই প্রবণতা ভয়ঙ্কর।’’

মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং গোপা বিশ্বাস সওয়াল করেন, কেন্দ্রের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রত্যেকের স্কুলের সঙ্গে খেলার মাঠ থাকা জরুরি। প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই মাঠ রয়েছে। আইনজীবীদের প্রশ্ন, এখন হঠাৎ কী প্রয়োজনে ওই মাঠ দখল করে নির্মাণ হচ্ছে? আদালতের ওই উদ্বেগের পরে স্কুল মাঠে কাজ বন্ধ করার আশ্বাস দেন রাজ্য এবং জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিল। স্কুল লাগোয়া ওই খেলার মাঠ থাকা জরুরি বলে জানান তাদের আইনজীবী। গত শুক্রবার ডিপিএসসির তরফে হাই কোর্টে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। তারা জানায়, ওই স্কুলের মাঠে নির্মাণ বন্ধ করা হয়েছে। আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে খেলার মাঠটি। সেখানে শিশুরা আবার খেলছে সেই ছবিও আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, একে একে সরকারি স্কুলগুলি উঠতে বসেছে। প্রত্যন্ত গ্রামের ওই স্কুল মাঠে শিশুরা খেলছে এটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। নজর রাখতে হবে আর যেন রাজনৈতিক নেতাদের হাতে ওই মাঠ চলে না যায়।

Advertisement

মানিকপুর গ্রামে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই প্রাথমিক স্কুলটি রয়েছে। সম্প্রতি ওই গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য অশোক মাইতি খেলার মাঠ দখল করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করছেন বলে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, গ্রামের অনেক ফাঁকা জায়গা থাকা সত্ত্বেও জোর করে স্কুলের মাঠ বন্ধ করে নির্মাণ করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement