শনিবার ধর্মতলায় চিকিৎসকদের অনশনমঞ্চ। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবারই নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন ডাক্তারেরা। একাদশীর দিন, রবিবার রাজ্যের ঘরে ঘরে তাঁরা অরন্ধন পালনের ডাক দিয়েছেন। সেই সঙ্গে আগামী সোমবার থেকে আংশিক কর্মবিরতি পালন করবেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরাও। রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতেই তাঁদের এই উদ্যোগ।
শনিবার সকালেও একই দৃশ্য ধর্মতলার অনশন মঞ্চে। মঞ্চের আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন আন্দোলনকারীরা, রয়েছেন সাধারণ মানুষও। আন্দোলনকারী এক চিকিৎসক ঊর্মিমালা সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, অনশনকারীরা সকলেই বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তবে শারীরিক অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল। উর্মিমালা মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘আমাদের অনশনকারীদের সংখ্যাটা কিন্তু ১০। উত্তরবঙ্গেও আমাদের দুই ভাই অনশনে বসে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেও ফোনে কথা হয়েছে। এই আন্দোলন শুধু কলকাতার নয়। এই আন্দোলন সারা বাংলার।’’
রবিবার সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) বেঙ্গল শাখা কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাক্তার দ্বৈপায়ন মজুমদার জানিয়েছেন, আগামী রবিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গোটা রাজ্যে জুড়ে এই অনশন চলবে। তিনি আরও জানান, এর পরেও কোনও সুরাহা না হলে বিকল্প পন্থা ভাববেন তাঁরা।
আলোলিকা এবং পরিচয়। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার রাতে ধর্মতলায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফে জানানো হয়, আরও দুই জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশন শুরু করছেন। তাঁরা হলেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। পরিচয় শিশুমঙ্গল হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। তিনি ওই হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। আর কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রথম বর্ষের পিজিটি আলোলিকা। তাঁরা জানান, সরকার যত দিন পর্যন্ত না তাঁদের দাবি মেটাচ্ছে, তত দিন এ ভাবেই জীবনকে বাজি রেখে এগিয়ে যাবেন একে একে।
—নিজস্ব চিত্র।
১০ দফা দাবিতে গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছ’জন চিকিৎসক। পরদিন যোগ দেন অনিকেত, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আরজি করে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার থেকে অনিকেতের অবস্থা খানিক স্থিতিশীল হলেও এখনও পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে স্নিগ্ধারও। কিন্তু মনোবল কমেনি কারোরই। পরে শুক্রবার রাতে অনশনে যোগ দিয়েছেন আরও দুই জন। অর্থাৎ বর্তমানে ওই মঞ্চে অনশনরত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। এ ছাড়া, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র ডাক্তারও ‘আমরণ অনশন’ করছেন।