নতুন আইনকে দুষলেন ডাক্তাররা

বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপরে একের পর এক হামলার প্রতিবাদে পথে নামলেন হাজারখানেক ডাক্তার। পরে রোটারি সদনে একটি প্রতিবাদ সভাও হল। কিন্তু নামে ‘অরাজনৈতিক’ ওই দু’টি কর্মসূচি থেকে কার্যত শোনা গেল রাজ্য সরকারের সমালোচনাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৬
Share:

বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপরে একের পর এক হামলার প্রতিবাদে পথে নামলেন হাজারখানেক ডাক্তার। পরে রোটারি সদনে একটি প্রতিবাদ সভাও হল। কিন্তু নামে ‘অরাজনৈতিক’ ওই দু’টি কর্মসূচি থেকে কার্যত শোনা গেল রাজ্য সরকারের সমালোচনাই।

Advertisement

হাসপাতাল-বিতর্কের মধ্যেই সম্প্রতি নতুন ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য শাখা সেটিকে সমর্থন জানালেও বিরোধিতা করেছে কেন্দ্রীয় শাখা। এ দিনের সভায় ডাক্তারদের উপরে হামলার অভিযোগকে ছাপিয়ে উঠে এসেছিল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের সমালোচনা। আর ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চের নামে মিছিল ও সভা হলেও সেখানে প্রায় প্রত্যেক বক্তার মুখেই শোনা গিয়েছে মূলত রাজনৈতিক কথাবার্তা। এমনকী, আইনের বেশ কিছু অংশ সংশোধনের দাবি জানিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আইনি পথে হাঁটার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ডাক্তারদের অনেকে।

সভায় চিকিৎসকেরা ‘ঐক্য’ বজায় রাখার আহ্বান জানালেও প্রকট ছিল বিরোধ। সেটা তৃণমূলপন্থী ও তৃণমূল-বিরোধী চিকিৎসকদের। এ দিন সভা-মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগই ছিলেন বামপন্থী এবং এসইউসি-প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের পরিচিত মুখ। তৃণমূল-প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কাউকে দেখা যায়নি। ছিলেন না নির্মল মাজি বা শান্তনু সেনের মতো তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতারা। দেখা মেলেনি ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-র রাজ্য শাখার নেতা ও সদস্যদেরও।

Advertisement

এ দিনের মিছিল ও প্রতিবাদসভার মূল আয়োজক সংগঠন ‘ডক্টর্স ফর পেশেন্টস’-এর তরফে চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সব চিকিৎসককে আহ্বান জানিয়েছিলাম। কোনও রাজনৈতিক রং দেখিনি। কেউ যদি যোগ না দেন সেটা তাঁর ব্যাপার।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, এ দিনের বক্তারা যেমন আইনের কিছু অংশে পরিবর্তন চেয়েছেন, তেমনই চিকিৎসকদের উপরে হামলারও প্রতিবাদ করেছেন। এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজার অর্থ হয় না।

আরও পড়ুন:বেদুইনদের মুলুকে চলল বাংলার লিচু

সভায় হাজির সরকারি চিকিৎসক রেজাউল করিম খোলাখুলি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতাল ও সেখানকার ডাক্তারেরা নতুন আইনের আওতায় থাকবেন না কেন? আসলে সামনে একের পর এক নির্বাচন আসছে। এই সময়ে বেসরকারি হাসপাতালের বিরোধিতা করলে মানুষকে খুশি করা যায়।’’ সভায় উপস্থিত সব্যসাচী চক্রবর্তী, দিব্যেন্দু বড়ুয়া, অগ্নিমিত্রা পাল, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টরা চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কের উন্নতিতে জোর দেন।

প্রত্যাশিত ভাবেই এই সভার চিকিৎসকদের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন আইএমএ-র রাজ্য শাখার অন্যতম নেতা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘‘নতুন ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের বিরোধিতার নামে কিছু ডাক্তার নোংরা রাজনীতি করছেন। সিপিএম এবং এসইউসি প্রভাবিত চিকিৎসকেরা একত্র হয়ে এর মধ্যে রয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement