সাংবাদিক বৈঠকে চিকিৎসকেরা। রয়েছেন (বাঁ দিক থেকে) পূণ্যব্রত গুণ, অর্জুন দাশগুপ্ত, মধুছন্দা কর, অলোক রায়চৌধুরী, রেজাউল করিম, অংশুমান মিত্র এবং সজল বিশ্বাস। সল্টলেকে। নিজস্ব চিত্র
এখনই সকলে মিলে পদত্যাগের সিঁড়িতে পা রাখতে চাইছেন না সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। শনিবার চিকিৎসকদের ৭টি সংগঠন সাংবাদিক বৈঠক করে জানায়, একসঙ্গে অনেক চিকিৎসক পদগত্যাগ করলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ভেঙে পড়তে পারে। চিকিৎসক হিসেবে তাঁরা তা চান না। তাই আপাতত সরকারকে আরও সময় দিতে চাইছেন। যদিও চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, গণ-পদত্যাগ নিয়ে মতভেদ রয়েছে সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যেই।
একাধিক চিকিৎসক সংগঠনের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাব ঢাকতে চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। রোগীর মৃত্যুতে আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকায় সরকারি হাসপাতালের শ’তিনেক চিকিৎসক পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর।
এ দিন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম, মেডিক্যাল সার্ভিসের মতো চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা জানান, গত সাত দিনে এ রাজ্যে ৪টি চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। এক বছরে সেই সংখ্যা ৮৫। একাধিক জায়গায় মহিলা চিকিৎসকেরাও আক্রান্ত হয়েছেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের সভাপতি চিকিৎসক রেজাউল করিম বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা হয়েছে। একটি সংগঠন রাজ্যপালের কাছেও গিয়েছিল। কিন্তু, সুরাহা হয়নি। এ ভাবে চলতে থাকলে আন্দোলন আরও বড় হবে।’’ চিকিৎসকদের আর একটি সংগঠন ডক্টর্স ফর পেসেন্টের তরফে মধুছন্দা কর বলেন, ‘‘মহিলা হিসেবে আরও বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’’ মেডিক্যাল সার্ভিসের তরফে চিকিৎসক অংশুমান মিত্র বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের সমস্যার কথা, তাঁদের মুখ থেকে শোনার বদলে আমলাদের কাছ থেকে শোনা হচ্ছে। সমস্যা মিটছে না।’’
যদিও এক চিকিৎসক জানালেন, এত সমস্যা থাকলেও এর সমাধান গণ-পদত্যাগ কি না, তা নিয়ে নিয়ে সংগঠনগুলির মধ্যে বিভেদ রয়েছে। আপাতত তাই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (আইএমএ) রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তনু সেন বললেন, ‘‘চিকিৎসাক্ষেত্রে পরিকাঠামোর উন্নতি হয়নি— এ কথা ঠিক নয়। তা ছা়ড়া পদত্যাগ কোনও সমাধান হতে পারে না।’’