গুজবের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাগ্যবন্তপুরে ছেলেধরা সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যা এক যুবককে স্থানীয় লোকজন বেধড়ক মারধর করে। প্রতীকী ছবি।
ছেলেধরার গুজব ছিলই। এ বার কিডনি চুরির গুজবে নিয়ে নাজেহাল হলদিয়ার পুলিশ-প্রশাসন। গত কয়েকদিন ধরেই শিল্প ও বন্দর শহরে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গে কিডনি কেটে নেওয়ার গুজব ছড়ানোয় শহরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গুজবের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাগ্যবন্তপুরে ছেলেধরা সন্দেহে শুক্রবার সন্ধ্যা এক যুবককে স্থানীয় লোকজন বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়িয়েছে যে, ‘পাশের রাজ্য বিহার থেকে পাঁচশো জনের একটা দল এসেছে। তারা ছোট ছোট ছেলেদের ধরে কিডনি কেটে নিচ্ছে’। মহকুমা পুলিসের দাবি, ইতিমধ্যেই এই ধরনের গুজবে কান না দিতে শহরবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রশাসনের তরফে লিফলেট ও পোস্টারও দেওয়া হচ্ছে। সন্দেহজনক কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় জানাতে বলা হয়েছে।
হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার পারিজাত বিশ্বাস জানান, তাঁরা লিফলেট থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রচার শুরু করেছেন। দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি জনতার আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। নন্দীগ্রাম ও দুর্গাচকে এই ধরনের পৃথক দুটি ঘটনায় দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তা ছাড়া ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধারে গেলে তাদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে। গুজবের উৎস সন্ধানে তাঁরা অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও নজরদারি করছেন। কেউ গুজব ছড়াচ্ছেন ধরা পড়লে কঠোর ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।
শুধু পুলিশ নয়, হলদিয়া ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক নীলাঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কিডনি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে গুজব ছড়াচ্ছে। কিডনি কী গাছের ফল যে কেটে নিয়ে যাওয়া যাবে। কিডনি প্রতিস্থাপনে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার দরকার।’’ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুজন জানার কথায়, ‘‘এই গুজবে কান না দেওয়াই উচিত।’’
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের জেলা কমিটির সদস্য ও মহিষাদলের চিকিৎসক সুব্রত মাইতি বলেন, ‘‘গুজব আটকাতে পাল্টা সচেতনতার প্রচার জরুরি। মানুষকে বোঝাতে হবে।’ হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল আজিজুর রহমান বলেন, ‘‘কোনও ধরনের গুজবে কান না দিতে শহরবাসীকে সচেতন করা হয়েছে। পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’