(বাঁ দিকে) প্রদীপ ঢালির পেট থেকে বের হওয়া পেরেক। (ডান দিকে) এক্স রে রিপোর্টে পেরেকের অবস্থান। নিজস্ব চিত্র
খাবারের মেনুতে প্রতি দিনই থাকত একটি করে লোহার পেরেক! মাসের পর মাস ওই ভাবে পেরেক খেয়ে গিয়েছেন তিনি। তাতেই ঘটে বিপত্তি। সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে অস্ত্রোপচার করে ওই ব্যক্তির পাকস্থলী থেকে বার করা হয়েছে ৬৩৬টি পেরেক!
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বাসিন্দা প্রদীপ ঢালি পেটের যন্ত্রণা এবং বমির উপসর্গ নিয়ে গত শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। আগে তিনি জেলার হাসপাতালে দেখিয়েছিলেন। সেখানে রোগ ধরা না পড়ায় তাঁকে মেডিক্যালে রেফার করা হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, তাঁর পাকস্থলীতে শয়ে শয়ে পেরেক জমে রয়েছে। শল্য চিকিৎসক সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের নেতৃত্বে তিন জন চিকিৎসক এ দিন ঘণ্টা দেড়েক ধরে ওই অস্ত্রোপচার করেন।
আরও পড়ুন: রোগীর সারি সিঁড়ি ছাড়িয়ে চাতালেও
অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসকেরা জানান, পেটের সব ক’টি পেরেকই বার করা গিয়েছে। প্রায় দেড় কেজি পেরেক জমলেও পাকস্থলীর বিশেষ ক্ষতি হয়নি। প্রদীপবাবুর অবস্থা স্থিতিশীল। দীর্ঘ দিন ধরেই বছর চুয়াল্লিশের প্রদীপবাবু মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তার জেরেই পেরেক খেয়েছিলেন তিনি। পেটের যন্ত্রণা ও বমি হলেও চিকিৎসককে পেরেক খাওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। তার জেরে প্রাথমিক ভাবে সমস্যা বা়ড়ে।
কতটা ঝুঁকি ছিল এই অস্ত্রোপচারে? সিদ্ধার্থবাবুর কথায়, ‘‘সাধারণত এত পরিমাণ লোহার পেরেক পাকস্থলীতে জমলে পাকস্থলীর মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। পাশাপাশি, পেরেক বার করার সময়েও পেটের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি হতে পারত। কিন্তু সেই সব বিপদ এড়ানো গিয়েছে।’’