কুন্তল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের বিতর্কিত চিঠি মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলের চিকিৎসককে তলব করেছিল সিবিআই। সেই মতোই সোমবার কলকাতায় সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে গেলেন ওই চিকিৎসক পিকে ঘোষ।
কুন্তল তাঁর লেখা বিতর্কিত সেই চিঠিতে তদন্তকারী সংস্থার উপর ‘চাপ দেওয়া’ এবং ‘নির্যাতন করা’র অভিযোগ তুলেছিলেন। কুন্তলের এই বক্তব্যের সত্যতা কতখানি, তা যাচাই করতেই জেলের চিকিৎসককে তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, কুন্তল এখন প্রেসিডেন্সি জেলেই বন্দি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে আরও খবর, কুন্তল বর্ণিত ‘অত্যাচারে’র পর তাঁর কোনও চিকিৎসা হয়েছিল কি না, তা ওই চিকিৎসকের কাছে জানতে চাইতে পারেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও কুন্তলের চিকিৎসা এবং হাসপাতালে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া সংক্রান্ত বিষয়েও ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
গত ২৯ মার্চ ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরই রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নাম বলার জন্য তাঁর উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করারও অভিযোগ তোলেন কুন্তল।
এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠান কলকাতার হেস্টিংস থানাতেও। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই একই নির্দেশ বহাল রাখেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহও। তার পরেই অভিষেককে গত ২০ মে ডেকেছিল সিবিআই। সে দিন সাড়ে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিষেককে। তার পর এই তদন্তে তৃণমূল নেতাকে তলব করে ইডি। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি।
চিঠিকে কেন্দ্র করে বিতর্কে গত ৯ জুন প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে তলব করেছিল সিবিআই। তাঁকে প্রায় ন’ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি বলেছিলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি বিচারাধীন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া মন্তব্য করা ঠিক নয়।’’
সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিবিআই দফতর থেকে বেরোন পিকে ঘোষ।