কয়েক দশক ধরেই উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি এবং দক্ষিণবঙ্গের দুই শিল্পনগরী দুর্গাপুর ও হলদিয়ায় বহুতল গজিয়ে উঠছে। কিন্তু সে সব বহুতলে আগুন লাগলে সামাল দেওয়ার জন্য উন্নত হাইড্রলিক মই নেই দমকলের কাছে। এই পরিকাঠামোহীনতার অভিযোগ মেনে নিয়েই দমকলকর্তারা জানাচ্ছেন, অবশেষে টনক নড়েছে তাঁদের। ওই তিনটি শহরের জন্য বিদেশ থেকে তিনটি মই কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক-একটি মইয়ের উচ্চতা ৫৪ মিটার।
দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘আগামী অর্থবর্ষে তিনটি হাইড্রলিক মই কেনার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে।’’ দমকল সূত্রের খবর, ক’দিন আগে পদস্থ কর্তাদের বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এক-একটি মইয়ের দাম প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এই ব্যাপারে দমকলের এক কর্তাকে বিদেশেও পাঠানো হতে পারে।
দমকলের খবর, কলকাতা ও লাগোয়া এলাকার জন্য এমন পাঁচটি মই আগেই কেনা হয়েছিল। সেগুলি যথাক্রমে ৪২, ৪৬, ৫৪ (দু’টি মই) ও ৭০ মিটার উঁচু। মূলত কলকাতা ও বিধাননগরে মইগুলি রাখা হয়। শহরের বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডে এই মই ব্যবহার করেন দমকলকর্মীরা। আগামী দিনে জেলা শহরগুলিতেও এমন মই রাখার পরিকল্পনা হয়েছে।
দমকলের কর্তারা জানান, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, হলদিয়ার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা শহরেও মাথা তুলছে বহুতল, বড় মাপের বেসরকারি হাসপাতাল ও শপিং মল। সপ্তাহান্তে কিংবা ছুটির সময়ে ভিড়ও বাড়ছে। ওই বহুতল, হাসপাতাল, মলে আগুন লাগলে তা সামাল দিতে এই ধরনের মই প্রয়োজন। বহুতলে আগুন সামলাতে হাই়ড্রলিক মই কতটা দরকারি, তা স্টিফেন কোর্ট, নন্দরাম মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড বুঝিয়ে দিয়েছিল। রাজ্যের ক্রমবর্ধমান পরিকাঠামোর কথা মাথায় রেখে দমকলের আরও উন্নতির কথাও ভেবেছেন কর্তারা। তাঁরা জানান, অন্ডাল, বাগডোগরা ও কোচবিহার বিমানবন্দরের অগ্নিসুরক্ষার জন্য বিদেশি প্রযুক্তির তিনটি আধুনিক মানের ‘ক্রাফট ফায়ার টেন্ডার’ (সিএফটি) কিনবে দমকল দফতর। শীঘ্রই গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে। দমকলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিমানবন্দরে আগুন লাগলে উন্নত প্রযুক্তির এই দমকলের গাড়ি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করবে।’’