কলকাতা হাইকোর্ট তাঁকে কলকাতা এবং হাওড়া পুর এলাকার বাইরে যেতে নিষেধ করেছিল। অভিযোগ, এই নিষেধের কথা বিলকুল গোপন করে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জার্মানি ঘুরে এলেন শিল্পপতি সঞ্জয় কাজোরিয়া। এই অভিযোগ আদালতে তুলেছেন তৃণমূলের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
চটের বস্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জুট কর্পোরেশনের সঙ্গে ১৮০০ কোটি টাকার চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে মামলা চলছে সঞ্জয়ের। সেই মামলাতেই সঞ্জয়ের ঘোরাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করে হাইকোর্ট। কিন্তু তা তিনি মানেননি বলে অভিযোগ। জুট কর্পোরেশনের আইনজীবী কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘ওই শিল্পপতি সরকারি চুক্তি ভঙ্গ তো করেছেনই। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কাউকে কিছু না জানিয়ে এর মধ্যে বিদেশেও চলে যান। পুরো বিষয়টিই কলকাতা হাইকোর্টকে জানানো হয়েছে।’’ তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর দফতর হাইকোর্টের ওই নির্দেশের কথা আদৌ জানতেন না। ওই শিল্পপতির তরফেও সরকারকে এ নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি।’’
এ বিষয়ে সঞ্জয়ের যুক্তি, ‘‘এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি নিয়েই জার্মানিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলাম না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর অফিসকে এ ব্যাপারে কিছু জানাইনি। আমি ওই সফরে মউ সই করতে গিয়েছিলাম।’’ এ ব্যাপারে আইনজীবী কল্যাণবাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি নিয়েও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করা যায় না।’’
মাসখানেক আগে জুট কর্পোরেশনের সঙ্গে ১৮০০ কোটি টাকার চটের বস্তা সরবরাহের চুক্তি হয় ওই শিল্পপতির সংস্থার। কিন্তু ওই চুক্তি মানা হয়নি বলে আদালতে অভিযোগ করে জুট কর্পোরেশন। তাদের দাবি, ওই শিল্পপতিকে পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় চটের বস্তা পাঠানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল। সেই বস্তা হরিয়ানায় আনা হলেও নির্দিষ্ট ঠিকানায় সরবরাহ করা হয়নি।
কর্পোরেশনের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, তাদের বিভাগীয় তদন্তে ধরা পড়ে, কাউকে কিছু না জানিয়ে ওই বস্তা হরিয়ানা থেকে ফিরিয়ে লিলুয়ার গুদামে রাখা হয়। এর পরেই জুট কমিশনার সুব্রত গুপ্তের নির্দেশে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (ইবি) কাছে এফআইআর করা হয়। তদন্তে নামে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটও। এই মামলা নিয়েও অবশ্য সঞ্জয়ের নিজের দাবি, জুট কর্পোরেশনের অভিযোগ মিথ্যা। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’