—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজ্যে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রয়াত চিকিৎসকের মৃত্যুর বিচারের দাবিতে যখন পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটিতে বিভিন্ন পদে মহিলা পুলিশ আধিকারিকদের কাজের সুযোগ করে দিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। বুধবার ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। রাজ্যের সব থানার আধিকারিকদের উদ্দেশে জারি করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাঁরা যেন ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটিতে কাজ করতে আগ্রহী মহিলা ডেপুটি পুলিশ সুপার, ইনস্পেক্টর, সাব-ইনস্পেক্টর, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর, এবং মহিলা কনস্টেবলদের একটি তালিকা তৈরি করেন। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে সেই তালিকা ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটিতে পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে। যোগদানের জন্য শর্ত, ইচ্ছুকদের শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে হবে। পাশাপাশি, এই বিশেষ ধরনের কর্মে যোগদানের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ উৎসাহী থাকতে হবে।
আগ্রহী পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মীদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে নিজেদের আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। ৩১ অগস্ট আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সব পুলিশ কমিশনারেটের, সব জেলা, মহকুমা,আইবি, সিআইডি, এসটিএফে কর্মরত মহিলা পুলিশেরা আবেদন করতে পারবেন। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের একটি বিভাগের এই বিজ্ঞপ্তিকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ। কারণ, রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নারী সুরক্ষার বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে একটি ঘোষণা করেছিলেন। রাতের কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় মূলত ১০টি এবং অতিরিক্ত সাতটি অর্থাৎ মোট ১৭টি পদক্ষেপের কথা জানান তিনি। একই সঙ্গে আলাপন জানিয়েছিলেন, যেখানে এবং যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
মঙ্গলবার বিধানসভার বাইরের সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারের এমন উদ্যোগে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, "মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে আসলে নারী সুরক্ষা থেকে নিজেদের হাত তুলে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টার এমন ঘোষণা আসলে তালিবানি ফতেয়ার সমান।" ঠিক তারপর দিনই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিরেরেক্টর অফ সিকিউরিটির তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মহিলা পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মীদের নিজেদের বিভাগে কাজ করার জন্য আবেদন করার ঘোষণা করে বিরোধী দলনেতার সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ।