Dilip Ghosh

দল চায় বলেই কুকথা বলেন দিলীপ

তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে বোমা মারলে আমিও বোমা মারব। কারও বামা মারার অধিকার থাকলে আমারও তা আছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২০
Share:

ছবি পিটিআই।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে বিরোধীরা যে অভিযোগে সরব, এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রকাশ্যে তাকেই মান্যতা দিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি, আর সাধারণ মানুষ-হিন্দু সমাজের কোনও চিন্তা নেই। আর যদি কেউ কিছু বলে আমরা আছি।’’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘যাদের মা-বাপের ঠিক নেই তারাই ওই কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতা করছে।’’

Advertisement

এই সব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় একসুর তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেসের। সকলেরই অভিমত, মানুষ এই কদর্য রাজনীতির জবাব দেবে। দ্বিতীয় বার রাজ্য সভাপতি মনোনীত হওয়ার পরে শুক্রবার হাওড়ায় প্রথম সভায় নাগরিকত্ব নিয়ে দিলীপবাবুর বক্তৃতা শুধু অশালীনতায় ভরাই নয়, যাঁরা নথি দিতে রাজি নন, তাঁদের তিনি ভয়ও দেখান। বিজেপির এই সভায় তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী তিন-চার মাস সময় দেবেন। তার মধ্যে সকলেই নথি দিয়ে দিন। খবরদার, দিদিমনির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) চক্করে পড়বেন না। জিএসটির সময় যে ব্যবসায়ীরা প্রথমে তা নেননি, পরে সমস্যায় পড়েছেন।’’

তাঁর মুখে বিভিন্ন কুকথা নিয়ে বিজেপির ভিতরে-বাইরে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে দিলীপবাবু সে সব নস্যাৎ করে দাবি করেন, বারবার হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগেও বিব্রত নন তিনি।

Advertisement

তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে বোমা মারলে আমিও বোমা মারব। কারও বামা মারার অধিকার থাকলে আমারও তা আছে।’’ এই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিরাট কোহালির ব্যাটে রান আছে। তাই তিনি ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন। রাজনীতি করছি ভোটে জেতার জন্য। লোকসভায় ১৮টি আসন জিতেছি। তাই দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে।’’

এর আগে এ দিন সকালে বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে নিজের কার্যকলাপ সম্পর্কে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘বিজেপি যা চায় আমি তা-ই করি, তা-ই বলি। আমি তো মাধ্যম। আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে সে-ও একই কাজ করবে। আমি সেই কাজটা ভাল করে করতে চাই। বিশিষ্টজনেরা কী বলেন, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। আমার কাছে দলই গুরুত্বপূর্ণ। বিশিষ্টজনেদের কাছে রাজনীতিকদের যাওয়ার কথা। এখানে তাঁরাই রাজনীতিকদের কথায় রাস্তায় নেমে পড়েন। তাই আমার কাছে ওঁরা নির্বোধ।’’

দিলীপবাবুর বক্তব্যের নিন্দা করে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক নেতা যখন নোংরামির এই স্তরে নেমে আসেন তখন তাঁর কথার প্রতিক্রিয়া দিতেও ঘৃণা হয়। এই সব অশিক্ষিত, বর্বর, রুচিহীনদের কাজে রাজনীতির পরিবেশ প্রতিদিন বিষিয়ে উঠছে। তবে যেমন দল, তার তেমন নেতা। মানুষ বুঝে নেবে।’’

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীরও মন্তব্য, ‘‘দিলীপ ঘোষ বাংলার কলঙ্ক। ঔদ্ধত্যের সীমা ছাড়াচ্ছেন। জবাব বাংলার মানুষই দেবেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘এই ধরনের কথার প্রতিক্রিয়া দিতে রুচিতে বাধে। দিলীপবাবুর দল দেশ জুড়ে যে লুম্পেন রাজনীতির আমদানি করেছে, তিনি তো তারই বাহক। মানুষের কাছেই ওঁরা জবাব পাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement