প্রতীকী ছবি।
..বাংলার রায় ছিল বিজেপি-বিরোধী। এই বিষয়ে সহমত হয়েও নিজেদের বিপর্যয়ের ময়না তদন্তে নানা মত উঠে আসা শুরু হল সিপিএমে। জেলা নেতৃত্বের একাংশ মনে করেন, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সঙ্গে শেষ মুহূর্তের জোটের ফল ভাল হয়নি। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনও সংযুক্ত মোর্চার ফলের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আবার অন্য কিছু জেলা নেতৃত্বের মত, নজিরবিহীন বিপর্যয়ের মধ্যেও মোর্চা যতটুকু ভোট পেয়েছে, তা সম্ভব হয়েছে আইএসএফ সঙ্গে ছিল বলেই। জেলা থেকে আসা সব রিপোর্ট নিয়ে আগামী ২৯ মে বসতে চলেছে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে সিপিএমের প্রথম রাজ্য কমিটির বৈঠক। কোভিড পরিস্থিতিতে ওই বৈঠক হবে ভার্চুয়াল। পরে জুন মাসে পরিস্থিতির উন্নতি হলে মুখোমুখি বসে রাজ্য কমিটির ফের বৈঠক হতে পারে।
কয়েক মাসের মধ্যেই ভবানীপুর-সহ অন্তত ৬টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন ও উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে প্রার্থীর মৃত্যুতে ভোট স্থগিত রেখেছিল নির্বাচন কমিশন, বাকি আসনগুলিতে উপনির্বাচন হবে। বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পরে এ বার ওই আসনগুলির নির্বাচনে মোর্চার নামেই লড়াই হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের বড় অংশই অবশ্য এই নির্বাচনেই জোট ভেঙে দেওয়ার পক্ষপাতী নন। তাঁদের মতে, প্রয়োজনে তেমন পরীক্ষা পরে পুরভোটে হতে পারে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নির্বাচনের পর্যালোচনা রিপোর্ট নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে।
দুই বর্ধমান-সহ কয়েকটি জেলার নেতৃত্বের জোট-প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্যান্য কিছু গলদের পাশাপাশি জোট-জটিলতা দলের বিরুদ্ধে গিয়েছে বলে তাঁদের মত। আবার দুই ২৪ পরগনা-সহ বেশ কিছু জেলার মতে, জোট ছাড়া অন্য বিকল্প কিছু ছিল না। কোন পরিস্থিতিতে মানুষের আস্থা অর্জন করা যায়নি, তার কারণ অনুসন্ধান প্রয়োজন। তাদের যুক্তি, শুধু জোটকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য কমিটির বৈঠকেই এই নিয়ে বিশদে আলোচনা হবে। এখন কোভিড পরিস্থিতিতে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই সাংগঠনিক কাজকর্ম চলবে।’’