৫০টি রাস্তা নির্মাণ থেকে হাত গোটাল এইচআরবিসি

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (পিএমজিএসওয়াই) প্রকল্পে হাওড়া জেলায় ৫০টি রাস্তা তৈরির দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নিল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার (এইচআরবিসি)। ফলে, ওই সব রাস্তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর অবশ্য দাবি করেছে, টেন্ডার ডেকে ওই রাস্তাগুলি এ বার তারাই তৈরি করবে। চলতি বছরের গোড়ায় অবশ্য ওই দফতরই রাস্তাগুলি তৈরির দায়িত্ব দেয় এইচআরবিসি-কে।

Advertisement

নুরুল আবসার

হাওড়া শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৪ ০১:০১
Share:

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (পিএমজিএসওয়াই) প্রকল্পে হাওড়া জেলায় ৫০টি রাস্তা তৈরির দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নিল হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার (এইচআরবিসি)। ফলে, ওই সব রাস্তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর অবশ্য দাবি করেছে, টেন্ডার ডেকে ওই রাস্তাগুলি এ বার তারাই তৈরি করবে। চলতি বছরের গোড়ায় অবশ্য ওই দফতরই রাস্তাগুলি তৈরির দায়িত্ব দেয় এইচআরবিসি-কে।

Advertisement

কেন পিছু হটল এইচআরবিসি?

ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তাগুলি তৈরির জন্য ঠিকা সংস্থাগুলি বাড়তি টাকা দাবি করে দর দিয়েছিল। বাড়তি ব্যয় অনুমোদন করার জন্য রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠি লেখা হলেও তারা তা অনুমোদন করতে রাজি হয়নি। এইচআরবিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর বাড়তি খরচ অনুমোদন করতে রাজি না হওয়ায় আমরা কাজটি না-করার সিদ্ধান্ত নিই। এ কথা ওই দফতরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

প্রায় দু’বছর ধরে হাওড়া জেলায় পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পে রাস্তা তৈরির কাজ থমকে রয়েছে। দু’বছর আগে এই জেলার জন্য মোট ৬৮টি রাস্তা তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করে কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতর। প্রতিটি কাজের জন্য হাওড়া জেলা পরিষদ ডিপিআর (বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট) তৈরি করে। তারই ভিত্তিতে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ৬৮টি কাজের জন্য ঠিকাদার চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয়। এর মধ্যে ১৮টি কাজের জন্য ঠিকা সংস্থা মিললেও বাকি ৫০টি কাজের ক্ষেত্রে কোনও ঠিকা সংস্থাই তিন বার বিজ্ঞাপনের পরেও টেন্ডারে অংশ নেয়নি। ফলে, ১৮টি রাস্তার কাজ হয়ে গেলেও বাকিগুলির কাজ করতে পারেনি রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দু’টি পর্যায়ে ওই ৫০টি রাস্তার কাজের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় এইচআরবিসি-কে। প্রথম পর্যায়ে উলুবেড়িয়া-২, পাঁচলা, আমতা-১, সাঁকরাইল, উদয়নারায়ণপুর এবং জগৎবল্লভপুরের জন্য ৭০ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে শ্যামপুর-১ ও ২, উলুবেড়িয়া-১, বাগনান-১ ও ২ ব্লকের জন্য বরাদ্দ করা হয় ৫০ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা। বছরের পর বছর ধরে রাস্তাগুলি তৈরি না-হওয়া ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।

এইচআরবিসি সূত্রের খবর, ঠিকা সংস্থাগুলি যে দর দেয় তা বরাদ্দের চেয়ে অন্তত ১৫ শতাংশ বেশি। সেই কারণে প্রকল্পটি থেকে তারা হাত গুটিয়ে নেয়। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “এটা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প। একটি টাকাও বাড়ানোর ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই।”

এইচআরবিসি হাত গুটিয়ে নেওয়ায় ফের নিজেরাই ওই সব রাস্তা তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। দফতরের ওই কর্তা বলেন, “নির্বাচনী আচরণবিধি চালু থাকায় আমরা টেন্ডার চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতে পারিনি। আচরণবিধি উঠে গিয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই আমরা বিজ্ঞাপন দেব।” কিন্তু বাড়তি টাকা আসবে কোথা থেকে? ওই কর্তার দাবি, “বহু জায়গাতেই রাস্তা হচ্ছে এই প্রকল্পে। কিছু টাকা বাড়তি রয়েছে। সেই টাকা হাওড়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement