ভোট মিটলেও অশান্তির আবহ কাটছে না হাড়োয়া-সন্দেশখালিতে।
রবিবার রাতে হাড়োয়ায় প্রায় ২ হাজার বিঘা মাছের ভেড়ি দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সে কথা অবশ্য মানেননি শাসক দলের নেতৃত্ব। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, লোকসভা ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই হাড়োয়া এবং সন্দেশখালির বিভিন্ন গ্রামে শুরু হয়েছে এলাকা দখলের লড়াই। তৃণমূলের সঙ্গে বামপন্থীদের মারপিট বাধছে। বোমা-গুলিও চলছে।
সিপিএমের অভিযোগ, রবিবার রাতে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হঠাৎ বোমা-গুলি ছুড়তে ছুড়তে মাদারতলা, কাঁটারআটি, কালীকাপুর এবং জঙ্গলআটি এলাকায় বেছে বেছে বামপন্থীদের ভেড়িগুলিতে আক্রমণ চালায়। ভেড়ি ছেড়ে পালান মাছ ব্যবসায়ী এবং পাহারাদারেরা। অভিযোগ, সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা ওই সব মাছের ভেড়ির দখল নেয় এবং লুঠপাট চালিয়ে প্রায় ৪০-৪৫ লক্ষ টাকার মাছ নিয়ে পালায়।
অন্য দিকে, ওই রাতেই সন্দেশখালি থানায় অভিযোগ জানিয়ে পুলিশি পাহারায় বাড়ি ফিরেছিল সরবেড়িয়া-আগারহাটি পঞ্চায়েতের গোলবুনিয়া গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশ কিছু মানুষ। সন্ত্রাসের জেরে তাঁরা কিছু দিন ঘরছাড়া ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁদের দাবি, বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে পুলিশ চলে যাওয়ার পরে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা মোটর বাইক নিয়ে গ্রামে ঢোকে। এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়ে গুলি-বোমা ছোড়ে তারা। আতঙ্কিত হয়ে গ্রামের পুরুষরা পালায়। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা সুশান্ত সর্দার বলেন, ‘‘বিজেপিকে ভোট দিয়েছি, এই সন্দেহে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার উস্কানিতে দুষ্কৃতীরা গ্রামে হামলা চালাচ্ছে। আমরা যতই বলার চেষ্টা করছি, ভোট বিজেপিকে দিইনি, তৃণমূলকেই দিয়েছি তা বিশ্বাস করতে চাইছে না ওরা।” সুশান্তবাবুর অভিযোগ, মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট করছে দুষ্কৃতীরা।
এ বিষয়ে সিপিএম নেতা ভুবন মণ্ডলের দাবি, “ভোটের আগে থেকে শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা যে ভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তা এখনও অব্যাহত। গত রাতে তারা ৪-৫টি মেছোভেড়িতে হামলা চালিয়ে দখল নেওয়ার পরে সেখান থেকে আমাদের দলের সকলকে তাড়িয়ে দিয়ে বেশ কয়েক লক্ষ টাকার মাছ লুঠ করেছে।”
অন্য দিকে, তাঁদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা সঞ্জু বিশ্বাস। তিনি বলেন, “তৃণমূলের কেউ যদি কোনও রকম গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে, তা হলে দল তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’
যুবকের দেহ উদ্ধার। সম্পত্তির লোভে বিকলাঙ্গ ভাইকে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর দাদার বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে বাগনানের কানাইপুরের শিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা দীনবন্ধু সামন্ত (২৬) নামে ওই বিকলাঙ্গ যুবকের ঝুলন্ত দেহ মেলে তাঁর বাড়ির পিছনের একটি গাছ থেকে।
এর পরেই তাঁর মা কল্পনাদেবী মেজো ছেলে মিলনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে ওই অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত পলাতক। তার খোঁজ চলেছে। মৃতদেহে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্পত্তি নিয়ে কল্পনাদেবীর চার ছেলের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই বিবাদ চলছিল। মিলন দীনবন্ধুর জমি হাতানোর চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ।