হুগলির প্রার্থীদের জোর প্রচার চলছে অনলাইনেও

আসল যুদ্ধ এখনও দেড় মাস দূরে। তবে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমেই। সকাল-সন্ধ্যে চলছে মিছিল, মিটিং থেকে কর্মিসভা বা দেওয়াল লিখন। বিরোধীদের কেন ভোট দেওয়া চলবে নাতা চুলচেরা বিশ্লেষণে বুঝিয়ে দিচ্ছেন দড় রাজনীতিকরা। কর্মসূচি শেষ হতে না হতেই, সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকে। ঘরে বসেই অহরহ নানা মেজাজে সিপিএম বা তৃণমূলের প্রার্থী চোখের সামনে হাজির ফেসবুকের মাধ্যমে।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৪ ০২:০৫
Share:

শ্রীরামপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার। শনিবার জাঙ্গিপাড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

আসল যুদ্ধ এখনও দেড় মাস দূরে। তবে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমেই। সকাল-সন্ধ্যে চলছে মিছিল, মিটিং থেকে কর্মিসভা বা দেওয়াল লিখন। বিরোধীদের কেন ভোট দেওয়া চলবে নাতা চুলচেরা বিশ্লেষণে বুঝিয়ে দিচ্ছেন দড় রাজনীতিকরা। কর্মসূচি শেষ হতে না হতেই, সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকে। ঘরে বসেই অহরহ নানা মেজাজে সিপিএম বা তৃণমূলের প্রার্থী চোখের সামনে হাজির ফেসবুকের মাধ্যমে।

Advertisement

যুগধর্ম মেনে এখন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মতামত আদান-করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী তীর্থঙ্ক রায় (দলের যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক) যেমন বেশ বুঝে গিয়েছেন, এক শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছতে ফেসবুকের জুড়ি নেই। রাজ্যে গণতন্ত্র ‘ফিরিয়ে আনতে’ ফেসবুকের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তাঁর হয়ে ফেসবুকে বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন কমরেডরা। কর্মীরা প্রার্থীর ছবির নীচে লিখছেন, ‘দিল্লির পথে কমরেড তীর্থ’।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম তো ফেসবুকে ইতিমধ্যে একটি কমিউনিটি তৈরি করেছে। নাম, ‘সেভ ওয়েস্ট বেঙ্গল’। এ জন্য নজরদারি দলও গড়া হয়েছে। হুগলি সিপিএম তেমনটা না করলেও, দলের নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে ভরসা রাখছেন। ডিওয়াইএফ নেতা ঐক্যতান দাশগুপ্ত লড়াইয়ের ডাক দিচ্ছেন ফেসবুকে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক সুদর্শন রায়চৌধুরী বলেন, “যাঁদের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁরা মতামত জানাতে এটা ব্যবহার করছেন। ছাত্র, যুব এবং শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনাও করছি।”

Advertisement

তৃণমূল নেতারাও পিছিয়ে থাকার পাত্র নন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু দিন যাবৎ ফেসবুকে নানা মন্তব্য পোস্ট করেন। প্রার্থী ঘোষণা হতেই, শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ফেসবুক প্রচারে নেমে পড়েন দলের নেতারা। কল্যাণবাবুর ব্যক্তিগত সচিব, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায় ‘দাদা’র হাসিমুখের ছবি পোস্ট করছেন, পরক্ষণেই শ্রীরামপুরের কাউন্সিলর পিন্টু নাগের তৈরি ফ্লেক্স শোভা পাচ্ছে ফেসবুকের দেওয়ালে। কল্যাণবাবু নিজেও নিয়মিত ফেসবুক, টুইট করেন। হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ থেকে আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী শক্তিমোহন মালিক বা রত্নাদেবীর প্রতিপক্ষ প্রদীপ সাহার সমর্থনেও অহরহ ফেসবুকে মন্তব্য পোস্ট হচ্ছে। কোথাও তৃণমূল লিখছে, ‘দেশ গড়ার শপথ নিন / তৃণমূলকে ভোট দিন’। আর সিপিএমের ডাক, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই / লড়াই করে জিততে চাই।

গর্বের সুরে বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অজয়প্রতাপ সিংহ বলছেন, “দিদি প্রার্থী ঘোষণা করার ঘণ্টাদু’য়েকের মধ্যেই কল্যাণদার নামে ফ্লেক্স তৈরি করে রাস্তার ধারে লাগিয়ে দিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফেসবুকে তা ছড়িয়েও পড়েছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে অনায়াসেই ঘরে ঘরে পৌঁছনো যাচ্ছে।” সুবীরবাবুর বক্তব্য, “প্রচারের ঢং বদলাচ্ছে। একটা মন্তব্যের উপর মানুষের পজিটিভ-নেগেটিভ মন্তব্য বা পরামর্শ আসে।” আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী আফরিন আলি অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনেও ফেসবুকে নানা মন্তব্য করছেন সমর্থকরা। দলের নেতা বিকাশ সিংহ ছবি আপলোড করছেন আফরিনের। তবে, প্রার্থীর এখনও নিজস্ব অ্যাকাউন্ট নেই। তাঁর স্বামী, রিষড়ার তৃণমূল নেতা সাকির আলি বলেন, “আমরা খুব দ্রুত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলব। প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারলে তো ভালই। আপাতত দলের কর্মীরাই সেটা করছেন।”

কংগ্রেসও ই-প্রচারে জোর দিচ্ছে। জেলা কংগ্রেস নেতা দিলীপ নাথের বক্তব্য, “রাহুল গাঁধীই তো প্রথম এ ভাবে জনসংযোগ শুরু করেছিলেন। আমরাও নিশ্চয়ই ফেসবুকের মাধ্যমে নয়া প্রজন্মের কাছে আরও বেশি করে পৌছনোর চেষ্টা করব।” পিছিয়ে নেই বিজেপিও। তারকা প্রার্থী বাপি লাহিড়ির সমর্থনেও ফেসবুক লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। হুগলির বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, “রাজনৈতিক বক্তব্য এমনিতেই আমি ফেসবুকে পোস্ট করি। ভোট প্রচারে তো করবই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement