সন্দেশখালির পর এ বার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মিনাখাঁর গ্রাম। তৃণমূলের বিজয় মিছিল ফেরত জনতা সিটুর একটি পার্টি অফিসে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের লোকজন দলের পতাকা লাগিয়ে মেছোভেড়ির দখল নিয়েছে বলেও দাবি সিপিএমের। রবিবার রাতে এই ঘটনার প্রতিবাদে মিনাখাঁর চাপালি গ্রামের সিপিএমের লোকজন সোমবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এলাকায় র্যাফ-পুলিশ টহল দিচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের পক্ষে মিনাখাঁর চাপালি পঞ্চায়েতের বকচোরা এলাকাতে বিজয় মিছিল বেরিয়েছিল। সিপিএমের অভিযোগ,ওই মিছিল ফেরত জনতা হোসেনপুর গ্রামে সিটুর একটি পার্টি অফিসে ঢুকে লুঠপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাধা দিতে গেলে বোমা ছোড়া হয়। সিপিএমের অভিযোগ, দলের কর্মী সুভাষ মণ্ডলের বাড়ির পাঁচিল, আরশাদ আলির পোলট্রিতে ভাঙচুর চালানো হয়। অহিদ পৈলানের দোকান দখল করা হয়। সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের মিছিলে অংশ নেওয়া লোকজন মেছোভেড়িতে ঢুকে সেখানে থাকা কর্মীদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে দলীয় পতাকা লাগিয়ে দখল নেয়। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকচোরায় প্রায় পঞ্চাশ বিঘা একটি খাস জমির দখলকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন থেকে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ চলছিল। সিপিএমের দাবি, ওই জমি পাট্টায় পেয়ে অনেকে সেখানে মাছ চাষ করে। তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, ক্ষমতায় থাকাকালীন সিপিএম জোর করে দলের কয়েক জনকে দিয়ে অবৈধ ভাবে ওই জমি দখল করে মাছের ব্যবসা শুরু করেছে।
চাপালি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা সিপিএম নেতা মহম্মদ হামেদ আলি মোল্লা বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিজয় মিছিলে থাকা লোকজন আমাদের শ্রমিক সংগঠনের একটি পার্টি অফিসে লুঠপাট চালিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মেছোভেড়ির দখল নেয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ করা সত্ত্বেও তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে আমাদের দলের লোকজনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে তৃণমূল নেতা সৌরেন্দ্রনাথ পাল বলেন, ‘‘ সিপিএম সর্বত্র বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে গণ্ডগোল বাধানোর চেষ্টা করছে। ওরা নিজেদের শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে গণ্ডগোল করে নিজেরাই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এখন তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে। গরিব মানুষের জমি অন্যায় ভাবে কেড়ে নিয়ে মেছোভেড়ির ব্যবসা করছে। আমরা শান্তি চাই বলেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’’