বোমা-ছুরি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে চার তৃণমূল সমর্থকের মৃত্যু হল রায়দিঘিতে। এর পিছনে সিপিএম-বিজেপির হাত রয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। সিপিএমের পাল্টা দাবি, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র রীতেশ তিওয়ারি বলেন, “বিজেপি খুনের রাজনীতি করে না। তৃণমূল এখন সর্বত্র বিজেপির ভূত দেখছে।
শনিবার রাত ১০টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে খাঁড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি হয়। বোমা ও ছুরিতে জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, নিহতেরা তাদের সমর্থক, সভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে সিপিএম তাঁদের উপরে হামলা চালায়। আজ, রবিবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল গ্রামে যাচ্ছে।
পুলিশ জানায়, নিহতদের নাম হাফিজুল গাজি (৩০), হাসান গাজি (২৭), ছোট্টু মোল্লা (২৬) এবং আতিয়ার মোল্লা (২৪)। প্রত্যেকেরই বাড়ি স্থানীয় সরস্বতীপাড়া এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম দু’জন দাগি দুষ্কৃতী। মুকুলবাবুর অভিযোগ, “সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে এই খুন করেছে। পিছনে বিজেপিরও মদত আছে। কারণ, তারা বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে।” যদিও গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি। সংঘর্ষে কত জন আহত হয়েছেন, তা-ও পুলিশ জানাতে পারেনি। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। কিন্তু রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, ১০০ দিনের প্রকল্পে রাস্তা তৈরির কাজ নিয়ে সম্প্রতি খাঁড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল। তার জেরে দিন কয়েক আগে দু’পক্ষে বচসাও হয়। রায়দিঘির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “সিন্ডিকেট নিয়ে যেমন আদি ও নব্য তৃণমূলের সংঘর্ষ চলছে, এ ক্ষেত্রেও শাসকদলের পুরনো ও নতুন কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বোমাবাজির জেরেই এই ঘটনা।” যা উড়িয়ে দিয়ে মুকুলবাবুর বক্তব্য, “নিজেদের বাঁচানোর জন্য অনেকেই অনেক কিছু বলেন।”
তৃণমূলের জেলা নেতা তথা ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদারও অভিযোগ করেন, “দলীয় সভা সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে আমাদের সমর্থকদের আক্রমণ করে সিপিএম। তাতেই চার জনের মৃত্যু হয়েছে।” জেলা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডলও বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কোনও গণ্ডগোল হয়েছে বলে আমার জানা নেই।”