কান্নায় ভেঙে পড়ে পুনম।
বাবা ছেলেবেলাতেই ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মা সংসার চালানোর জন্য সামান্য টাকা রোজগার করেন পরিচারিকার কাজ করে। মা-মেয়ের এই অভাবের সংসারে অর্ধেক দিন না খেয়ে স্কুলে যেতে হয় মেয়েকে। এমনই এক পরিবারের মেয়ে পুনম রায়। এ বার উচ্চমাধ্যমিকে ক্যানিংয়ের ডেভিড সেস্ন হাইস্কুল থেকে ৪০১ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। স্বপ্ন দেখে আইপিএস অফিসার হওয়ার।
সঞ্জয়পল্লিতে পঞ্চায়েত থেকে করে দেওয়া ছোট্ট ঘরে থাকে পুনমরা। দিনের বেলায় মায়ের সঙ্গে সংসারের অর্ধেক কাজ সামাল দিয়ে রাতে ৬-৭ ঘন্টা পড়াশোনা করেছে সে। এখন সে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভূগোল নিয়ে পড়ে সত্ পুলিশ অফিসার হতে চায় মেয়েটি। বই কেনার সামর্থ্য না থাকায় পাড়ার লোকেরা বই দিয়ে সাহায্য করেছেন মেয়েটিকে। তাই গোপাল সাহা ও দেবশঙ্কর মণ্ডলরা বিনা পয়সায় পড়িয়েছেন পুনমকে। তাঁরা বলেন, “ওর দৃঢ় মানসিকতা সাফল্য এনে দিয়েছে।” পুজোর সময় অনেক বন্ধুদের পুনম দেখেছে নতুন জামা পড়তে। কিন্তু কিছুই জোটেনি তার ভাগ্যে। পরিবারের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ে পুনম। বলে, “আমাকে আর আমার মাকে যে কষ্ট দিয়েছে, আমাকে মেয়ে বলে অস্বীকার করেছে, তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্যই পুলিশ অফিসার হতে চাই। তা ছাড়া, এই ঘটনা যেন আর কোনও মেয়ের সঙ্গে না ঘটে।”