‘অন্যায় দাবি’ না মানায় লোকজন নিয়ে চড়াও হয়ে পুড়শুড়ার সোদপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর সন্ধ্যায় ব্যাঙ্ক কর্মীদের যখন পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল তখন পুলিশের সামনেই সত্যচরণ সামন্ত নামে ওই নেতার নেতৃত্বে দুই ব্যাঙ্ককর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটে বুধবার। ব্যাঙ্কের তরফে ওই নেতা-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুরশুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহত দুই ব্যাঙ্ক কর্মী তথা সহকারী ম্যানেজার অভিষেক মন্ডল এবং করণিক অভী ভট্টাচার্যর প্রাথমিক চিকিত্সা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাঙ্কটি বন্ধ রাখা হয়। বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ আরামবাগের এসডিপিও গিয়ে তদন্ত এবং নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে ব্যাঙ্ক খোলা হয়।
এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে, ব্যাঙ্ক খোলা রাখতে পুলিশি ব্যবস্থা হচ্ছে।”
ম্যানেজার নন্দলাল ঘোষের অভিযোগ, “রাজনৈতিক খবরদারিতে আমরা জেরবার। আমাদের আইন বিরুদ্ধ কাজ করতে বাধ্য করার চেষ্টা চলছে। হুমকি ও হামলায় ব্যাঙ্কের কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব করছেন।” সত্যচরণবাবু তৃণমূলের পুড়শুড়া অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “ব্যাঙ্ক কর্মীদের সঙ্গে বচসা হয়েছে। তবে মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ঘটনার দিন দুপুরে তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে নিজের পরিচয় দিয়ে দ্রুত শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট খোলার কথা বললে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। তাঁকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হয়। তারই প্রতিবাদে কয়েকজন শ্রমিক খেপে যান।
ব্যাঙ্ক এবং পুড়শুড়া ২ পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ওই এলাকায় ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর ছিল। পঞ্চায়েত কর্তৃৃপক্ষ চাইছিলেন দ্রুত সমস্ত অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করুক ব্যাঙ্ক। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ সামলে সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০টি ১০০ দিন প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খুলবেন তাঁরা।
পুড়শুড়া ২ পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের বাবলু বাগের অভিযোগ, ৩৮০০ শ্রমিকের অ্যাকাউন্ট খোলার কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে ১৯০০ জনের এখনও অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি। ওই দিন ব্যাঙ্কের পরিষেবা উন্নতির দাবিতে কিছু মানুষ এবং দলের কিছু নেতা বিক্ষোভ দেখান। হামলা, মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ৩৮০০ শ্রমিকের মধ্যে ৩৭০০ জনের মতো অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে। যাঁদের বাকি রয়েছে, তাঁদের কাগজপত্রে গোলমাল আছে। সে সব ঠিক করে আনতে বলা হয়েছিল।