গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার চার

লাইনপাড়ের ঝুপড়িতে ঢুকে গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে এক মহিলাকে রাতভর গণধর্ষণের অভিযোগে চার জনকে ধরল পুলিশ। মহিলার গোঙানির শব্দে তাঁর দু’বছরের মেয়ে জেগে উঠে কাঁদতে শুরু করলেও দুষ্কৃতীরা নিরস্ত হয়নি। মহিলা পুলিশকে জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁর খুড়তুতো ভাইয়ের বন্ধু এবং সেই সুবাদে তাঁরও পরিচিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। বসিরহাট থানার দাবি, ধৃতেরা দোষ কবুল করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০২:৩২
Share:

লাইনপাড়ের ঝুপড়িতে ঢুকে গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে এক মহিলাকে রাতভর গণধর্ষণের অভিযোগে চার জনকে ধরল পুলিশ। মহিলার গোঙানির শব্দে তাঁর দু’বছরের মেয়ে জেগে উঠে কাঁদতে শুরু করলেও দুষ্কৃতীরা নিরস্ত হয়নি।

Advertisement

মহিলা পুলিশকে জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁর খুড়তুতো ভাইয়ের বন্ধু এবং সেই সুবাদে তাঁরও পরিচিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। বসিরহাট থানার দাবি, ধৃতেরা দোষ কবুল করেছে। শনিবার আদালতে তোলা হলে তাদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার পরে মহিলাকে হাওড়ার লিলুয়া হোমে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর চারেক আগে বসিরহাটেরই চাঁপাপুকুর গ্রামের মহিলার বিয়ে হয়। তাঁর স্বামী রাঁধুনির কাজ করেন। মাঝে মধ্যেই তাঁকে নানা জায়গায় যেতে হয়। মহিলার বাবা-মা আন্দামানে থাকেন। তাই স্বামী না থাকলে তিনি মেয়ে নিয়ে বসিরহাট থেকে হাসনাবাদ যাওয়ার রেললাইনের ধারে উত্তর বাগুন্ডি গ্রামে এক কাকার ঝুপড়িতে এসে থাকতেন।

Advertisement

মহিলার অভিযোগ, ৩ জুন, মঙ্গলবার রাতে তিনি মেয়েকে নিয়ে একাই ঘরে ছিলেন। নিমন্ত্রণ থাকায় কাকারা সপরিবার চলে গিয়েছিলেন। রাতে ফেরেননি। মহিলার কথায়, “রাত ১১টা নাগাদ দমার বেড়ার দরজা ভেঙে চার জন ঢোকে। ওরা কাকার ছেলের বন্ধু। প্রথমে ওদের উদ্দেশ্য বুঝতে পারিনি।” তাঁর অভিযোগ, “গলায় ভোজালি ঠেকিয়ে পরপর আমাকে ধর্ষণ করে ওরা। চিৎকার করতে গেলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে দেয়। মেয়ের দোহাই দিলেও ছাড়েনি।” পুলিশকে তিনি জানান, গোঙানির শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল তাঁর মেয়ের। সে চিৎকার করলে এক পড়শি দম্পতি বেরিয়ে আসেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের দেখে গুলি চালানোর হুমকি দেয়। ভয়ে তাঁরা ঘরে ঢুকে যান। সারা রাত নির্যাতনের পরে কাউকে কিছু বললে জানে মেরে দেবে হুমকি দুষ্কৃতীরা চলে যায়।

মহিলা জানান, এই ক’দিন ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেননি। শেষে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এ দিন ঘটনাস্থলে গেলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রামবাসীরা জানান, কিছু দিন ধরেই বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এলাকায় এসে নানা ভাবে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করছে। তাদের ভয়ে সন্ধ্যার পরে রেললাইনের উপর দিয়ে কেউ যাতায়াত করতে সাহস পায় না। অভিযোগকারিণীর খুড়তুতো ভাই বেল্লাল গাজি এ রকম কিছু লোকজনের সঙ্গে মিশছে। সে বাড়ি রঙের কাজ করে। কিন্তু এলাকায় তারও বিশেষ সুনাম নেই। অভিযুক্তেরা এলাকার কয়েক জনকে ধরে বিষয়টির মীমাংসা করানোর চেষ্টা করেছিল। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় বসিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গণধর্ষণের মামলা রুজু করে ওই রাতেই পশ্চিম দণ্ডিরহাটের বাড়ি থেকে নুরুল আমিন মোল্লা, আরিফ মোল্লা, শেখ ময়না ওরফে হাফিউল্লা ও বড় জিরাফপুর গ্রামের বাড়ি থেকে উৎপল মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা সকলেই বাড়ি রং করার কাজ করে বলে দাবি করেছে।” কামদুনির ধর্ষণ-খুনের বর্ষপূর্তিতে সেখানে ঘুরে ফেরার পথে নাট্যকর্মী চন্দন সেন-সহ বামপন্থী বুদ্ধিজীবীদের একটি দল উত্তর বাগুন্ডি গ্রামেও ঘুরে গিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement