তাপমাত্রা কখনও ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তো কখনও ৪০ ডিগ্রি। আবার কখনও ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছে যাচ্ছে। তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে লোডশেডিং। গরম আর লোডশেডিংয়ের এই যুগলবন্দিতে নাজেহাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার বেশিরভাগ এলাকার মানুষ। প্রায় এক সপ্তাহ হল দিনে ৮-৯ ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। তার উপর যতক্ষণ বিদ্যুত্ থাকছে লো-ভোল্টেজের কারণে তারও যথাযোগ্য সুফল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। একে লোডশেডিং, তারপর লো-ভোল্টেজের জন্য ছাত্রছাত্রী থেকে ব্যবসায়ী, কারখানার শ্রমিকেরা চরম সমস্যায় পড়েছেন। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যা নিয়ে বার বার বিদ্যুত্ বণ্টন কোম্পানির মহকুমা অফিসের দ্বারস্থ হলেও পরিস্থিতির উন্নতির কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।
মহকুাম ১ ও ২, বাসন্তী, গোসাবা ব্লকের বহু এলাকায় আজও বিদ্যুত্ পৌঁছয়নি। অল্প যে কিছু এলাকায় বিদ্যুত্ পৌঁছেছে সেখানকার বাসিন্দারাই বিদ্যুতের (লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ) এই সমস্যায় ভুগছেন। লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে কিছু না জানাতে পারলেও লো-ভোল্টেজের পিছনে বহু দূর থেকে সংযোগ নিয়ে আসা এবং ওই সব এলাকায় ‘হুকিং’-এর সমস্যাই বড় কারণ বলে মনে করছেন বিদ্যুত্ দফতরের কর্তারা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুত্ থাকলেও তার ভোল্টেজ এতই কম থাকছে যে টিভি, ফ্রিজ চালানো যাচ্ছে না। আলোও ঠিকমত জ্বলছে না। বাসন্তীর এক গ্রিল কারখানার মালিকের অভিযোগ, এই ব্যবসায় বিদ্যুত্ই আসল। কিন্তু যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
গোসাবার এক জরির কারখানার মালিকের কথায়, “বিদ্যুতের সমস্যার জন্য ঠিকমতো মহাজনের মাল ডেলিভারি দেওয়া যাচ্ছে না। মহাজন কথা শোনাচ্ছে। পাশাপাশি কর্মীদেরও বসিয়ে বসিয়ে মাইনে দিতে হচ্ছে। আপনিই বলুন, এ ভাবে ব্যবসা করা যায়?”
সরকারি দফতরেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্লক ও মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, বিদ্যুতের সমস্যার জন্য জেলা সদর বা কলকাতায় বিভিন্ন বিষয়ের রিপোর্ট পাঠাতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
মহকুমার বিদ্যুত্ দফতরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধেশ্বর দাস বলেন, “ট্রান্সফরমারে গোলযোগ দেখা দেওয়ায় বাসন্তীতে বেশ কিছুদিন বিদ্যুত্ ছিল না। তা ছাড়া বানতলায় বিদ্যুতের সাব-স্টেশন থেকে এই মহকুমায় বিদ্যুতের সংযোগ ানতে হয়েছে। এত দূর থেকে বিদ্যুত্ সংযোগ আনার কারণে ভোল্টেজের সমস্যা হচ্ছে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে ওই সমস্যা মেটানো যায়।”