লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার ভোর থেকে গোসাবা খেয়াঘাটের সব ভুটভুটি সরিয়ে নিয়েছিলেন ঘাটমালিক। তার জেরে বিদ্যাধরী নদী পার হতে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। সুন্দরবন নাগরিক মঞ্চের নেতৃত্বে সকাল থেকে গোসাবা থানা ও ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে বিডিও সুমন চট্টোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে যাত্রীদের পারাপারে ভুটভুটির ব্যবস্থা করা হয়।
এ দিনই আবার ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ভোর থেকে প্রায় ছ’ঘণ্টা নামখানায় হাতানিয়া-দোহানিয়া নদী পেরনোর ভুটভুটি চালানো বন্ধ রাখেন নৌকা মালিকেরা। পরে নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও বিডিওর উপস্থিতিতে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
গোসাবা ঘাটের মালিক নওসের মিদ্দে বলেন, “৪ লক্ষ টাকা দিয়ে জেলা পরিষদের কাছ থেকে ঘাটের লিজ নিয়েছিলাম। কিন্তু সব জায়গায় খেয়া পারাপারের জন্য ভাড়া বাড়ানো হলেও গোসাবায় এক টাকায় পারাপার করানো হচ্ছিল। এতে লোকসান হচ্ছিল। ভাড়া বাড়াতে প্রশাসনের অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা শোনা হয়নি। তাই মেয়াদ শেষ হলে খেয়া পারাপার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অলকেশ প্রসাদ রায়ের ব্যাখ্যা, “ভোট ঘোষণার পরে নতুন করে দরপত্র ডাকা সম্ভব হয়নি। পুরনো ঘাট মালিককেই তাই পরিষেবা চালু রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি ভাড়া বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ভোটের মুখে ভাড়া বাড়ানো সম্ভব না। কিন্তু উনি কোনও কথা না শুনে পরিষেবা বন্ধ করে দিলেন। আপাতত বিডিওকে বলে একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভোটের পরে নতুন দরপত্র ডাকা হবে।” বিডিও সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আপাতত ৬টি ভুটভুটির মালিকের সঙ্গে কথা বলে খেয়া পারাপার করানো হবে।”
নামখানা থেকে নারায়ণপুর দীর্ঘদিন ধরেই হাতানিয়া-দোহানিয়া নদীতে যন্ত্রচালিত নৌকায় পারাপারের ব্যবস্থা রয়েছে। তার মধ্যে চারটি পঞ্চায়েত সমিতির ও কুড়িটি নৌকা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। বর্তমানে খেয়া পারাপারের জন্য যাত্রীদের এক টাকা দিতে হয়। নৌকা মালিকদের দাবি ছিল, জ্বালানির দাম বাড়ায় এপ্রিল থেকে ১ টাকা করে ভাড়া বাড়ানো হোক। কিন্তু এ দিন নতুন ভাড়া চালু নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে নৌকামালিকদের বচসা বাধে। যার জেরে প্রায় ৭ ঘণ্টা পারাপার বন্ধ ছিল। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুরনো ভাড়াতেই পারাপার শুরু হয়। বিডিও তাপস মণ্ডল বলেন, “ভোট মিটলে নৌকামালিকদের দাবি পূরণের ব্যবস্থা হবে।”