(বাঁ দিকে) ডেরেক ও’ব্রায়েন। অধীর চৌধুরী (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।
বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট ঘেঁটে গেল কেন? কারণ হিসেবে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় জোট ভেস্তে যাওয়ার প্রথম কারণ অধীর চৌধুরী, দ্বিতীয় কারণ অধীর চৌধুরী, তৃতীয় কারণও অধীর চৌধুরীই।’’ তার পর ডেরেকের আক্রমণের জবাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানালেন অধীর চৌধুরী।
ডেরেকের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অধীর বলেন, ‘‘উনি তো বিদেশি। বিদেশিরা বেশি জানেন। ওঁর থেকেই যা জানার আপানারা জেনে নিন।’’ অধীর সম্পর্কে এ-ও বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি এবং অধীরের ভাষার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তাঁরা এক সুরে কথা বলেন।’’ বিরোধী শিবিরের একাংশ মনে করছে, ডেরেক বোঝাতে চেয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষেরা যে ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন, অধীরও সেই একই ভাষায় কথা বলেন।
সকালে রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রায় কোচবিহারে ছিলেন অধীর। তার পর রাহুল দিল্লি ফিরে যাওয়ার পর তিনি যান দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস দফতরে। সেখানে পরের ধাপের যাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কয়েক দিন ধরেই জোট নিয়ে অধীর তেমন কোনও মন্তব্য করছেন না। তৃণমূলের মন্তব্য নিয়েও কোনও সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। বরং সর্বভারতীয় নেতাদের কোর্টে বল ঠেলে দিচ্ছেন। তবে ডেরেকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে বিদেশি বলে কটাক্ষ করেছেন লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা।
বুধবারই অল্প কথায় বাংলায় জোটের সম্ভাবনা নস্যাৎ করে দিয়েছিলেন মমতা। পূর্ব বর্ধমান যাওয়ার আগে কংগ্রেস নিয়ে প্রশ্ন করায় মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমার কারও সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। আমার প্রস্তাব প্রথম দিনেই প্রত্যাখ্যান করেছে। তখন থেকেই আমরা একলা লড়ব বলে ঠিক করে নিয়েছিলাম।’’ রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে মমতার আলোচনা হচ্ছে। মমতা সেই বক্তব্যকেও উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কারও কোনও আলোচনা হয়নি। অ্যাবসোলিউটলি মিথ্যা কথা!’’ বুধবার মমতা আরও বলেছিলেন, ‘‘এই যে আমাদের রাজ্যে আসছে (রাহুলের যাত্রা), আমাকে তো এক বারও বলেনি! সৌজন্য দেখিয়েও তো বলা উচিত ছিল!’’ তার পর যত সময় এগিয়েছে, ততই কংগ্রেস-তৃণমূল তিক্ততা বেড়েছে। যদিও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নানাবিধ মন্তব্য করে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। তার মধ্যেই আবার ডেরেকের উদ্দেশে বিদেশি খোঁচা দিলেন অধীর।