পুরসভায় পদ্মের হাওয়া, ডেঙ্গি প্রতিরোধ শিকেয়

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পুর প্রশাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে নামতে হবে। এ নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা স্বাস্থ্য ও পুর দফতর থেকে জারি করা হয়েছে।”

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল থেকে কাউন্সিলরদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপড়েনও। এরই মাঝে কলকাতা ও আশপাশের পুরসভাগুলিতে ধাক্কা খাচ্ছে ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচি। মূলত জুলাই থেকেই ডেঙ্গির প্রকোপ মাত্রা ছাড়ায়। ইতিমধ্যেই অশোকনগর ও হাবড়ায় দু’জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। তার পরেও অধিকাংশ পুর প্রশাসনের ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচিতে নজর নেই বলে পুর দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পুর প্রশাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে নামতে হবে। এ নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা স্বাস্থ্য ও পুর দফতর থেকে জারি করা হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনে প্রত্যেক পুরসভাকে কাজ করতে হবে। ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের কাজে গাফিলতি দেখলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা পুর দফতরের রয়েছে। তাই পুরসভাকে এখনই এই কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’’

২০১৭’তে রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেড়েছিল। কলকাতা, সল্টলেক, ব্যারাকপুর মহকুমা, হুগলি শিল্পাঞ্চল, হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকায় প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় ১০০ জনেরও বেশি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার পর রাজ্যের ১২৭টি পুরসভার ২৯৭৬ ওয়ার্ডে ১৫ হাজার ১৮০টি দল তৈরি করে ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। প্রতি বছর জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেঙ্গি রোধের প্রথম বৈঠকটি করেন। জুন থেকে সেই তৎপরতা চরমে ওঠে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, রাজ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হয় জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। জুন থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের হিসাব নেওয়া, স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট পাঠান, এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা, পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করার কথা। কিন্তু জুন মাস কেটে গেলেও অধিকাংশ পুরসভাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই হয়নি। এক স্বাস্থ্য-কর্তার কথায়,‘‘পুর প্রশাসনগুলিতে সক্রিয় করার জন্য ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে।’’

পুর দফতরের খবর, ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে করুণ অবস্থা ব্যারাকপুর মহকুমার ১৬টি পুরসভায়। এখানকার পাঁচটি পুরসভার সিংহভাগ কাউন্সিলর ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অন্য পুরসভাগুলির বহু কাউন্সিলর বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে খবর। একই অবস্থা বনগাঁ লোকসভা এলাকার পুরসভাগুলিতেও। সল্টলেক এবং কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের মধ্যেও বিজেপি নিয়ে এতটাই গুঞ্জন যে, পুর পরিষেবা নিয়ে তত হেলদোল নেই বলে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement