পি চিদম্বরম। —ফাইল চিত্র।
বাইরের সাবেক কাঠামোটা রয়ে গিয়েছে ঠিকই। তবে এ দেশের গণতন্ত্রের অভ্যন্তরীণ চেহারাটা ক্রমশই অন্তঃসারশূন্য, ‘ফাঁপা’ হয়ে যাচ্ছে। কলকাতায় শনিবার এই সুরই শোনা গেল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরমের গলায়।
সেন্ট জ়েভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দিন ‘গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনায় ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট তথা বিজেপি’র নামোচ্চারণ না করে চিদম্বরমের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল গেরুয়া শিবিরের দিকেই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে এক দেশ এক ধর্ম, এক ভাষা, এক সংস্কৃতি এমনকি, এক দেশ, এক রেশন কার্ডের নীতি নিয়ে যে ভাবে সরকার এগোচ্ছে, তাতে গণতন্ত্রের ভরিষ্যৎ ক্রমশ ফাঁপা হয়ে পড়ছে।’’ আট বারের সাংসদ, বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতার অভিযোগের তালিকা থেকে বাদ পড়ছে না শাসক-বিরোধী রাজ্যগুলিতে ‘টাকার খেলায়’ একের পর এক সরকার ফেলে দেওয়ার ঘটনাও। তিনি বলেন, ‘‘এক সময়ে ভোট প্রার্থীর প্রচারের জন্য বরাদ্দ হত ৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এখন এক একটি নির্বাচনে এ সব কাজে হিসেব বহির্ভূত ভাবে খরচের অঙ্ক ১,৭৬, ০০০ কোটি টাকা।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘সারা দেশ এখন ভীত-সন্ত্রস্ত। বিরোধীদের জেলে ভরে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, শিল্পপতি থেকে সংবাদমাধ্যম, সর্বত্রই এখন ভয়ের বাতাবরণ। গত ১০ বছরে বিশ্ববাজারের প্রতিটি তালিকাতেই দেশ তাই পিছিয়ে পড়েছে। জি-২০ দেশগুলির মধ্যেও ভারতের স্থান এখন ২০’তম।’’
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার ফেলিক্স রাজ এবং অধ্যাপক প্রভাত কুমার দত্তের যৌথ উদ্যোগে লেখা ‘ডেভলপমেন্ট, ডিসেন্ট্রালাইজ়েশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ নামে একটি বইয়েরও এ দিন উদ্বোধন করেছেন চিদম্বরম।