পিংলার গ্রামে বিস্ফোরণের তদন্তে সিআইডি-র উপরে আস্থা রাখতে না-পেরে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার অনিন্দ্যসুন্দর দাস নামে হাইকোর্টেরই এক আইনজীবী মামলা ঠুকে আর্জি জানান, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে পিংলা-তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হোক।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ৬ মে পিংলার একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ছ’টি শিশু শ্রমিক-সহ ১২ জনের মৃত্যু হয়। রাজ্য সরকার সিআইডি-কে দিয়ে ওই বিস্ফোরণের তদন্তের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু ওই সংস্থা ঠিকঠাক তদন্ত করছে না বলে মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে। সিআইডি-র তদন্তের উপরে কেন আস্থা রাখা যাচ্ছে না, আবেদনকারী তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাই রিপোর্ট দিয়েছে, ওই কারখানায় বোমাও তৈরি হত। কিন্তু সিআইডি তদন্তে নেমে জানিয়েছে, ওই কারখানায় নাকি শুধু বাজিই তৈরি হত! কেন এনআইএ-কে দিয়ে তদন্ত করানোর প্রয়োজন, তা বোঝাতে গিয়ে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন আবেদনকারী। তাঁর বক্তব্য, খাগড়াগড় বিস্ফোরণের তদন্তে সাফল্য পেয়েছে এনআইএ। ওই বিস্ফোরণের চাঁইদের গ্রেফতারও করেছে তারা। একই সঙ্গে বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবার-পিছু ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে ওই মামলায়।
পিংলার বিস্ফোরণ কাণ্ডে নিহতদের পরিবার-পিছু পাঁচ লক্ষ এবং আহতদের জন্য দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করে এ দিনই রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হন বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। তাঁর নতুন দল-সহ পাঁচটি দলের ‘গণফ্রন্ট’-এর তরফে ঘটনাস্থল ঘুরে এসে এ দিন রাজ্যপালকে রিপোর্ট দিয়েছেন রেজ্জাক। তাঁর কথায়, ‘‘মুর্শিদাবাদের দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের যে-সব নাবালককে ভুল বুঝিয়ে ওই কারখানায় কাজ করানো হত, তারা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তাই ক্ষতিপূরণের দাবি তুলছি।’’
বামফ্রন্টের রাজ্য চেয়ারম্যান বিমান বসু-সহ বাম প্রতিনিধিদলের আজ, মঙ্গলবার বিস্ফোরণস্থলে যাওয়ার কথা। সভা করার কথা ছিল। তাই সোমবার রাতে মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছিল। অনুমতি না-থাকায় পুলিশ সভার মঞ্চ বাঁধার কাজে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তার পরেই মঞ্চ খুলে ফেলা হয়। সিপিএমের স্থানীয় নেতা নয়ন দত্ত বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের কর্মসূচি অপরিবর্তিতই থাকছে।’’ এ দিন পিংলায় সভা করার কথা ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু অনুমতি না-মেলায় সেই সভা হয়নি।