এ বারে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসূচিতে পাহাড় নেই। তবে সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরের শুরুতেই পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক বোর্ডের দাবি শুনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন সকাল থেকেই পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জড়ো হয়েছিলেন। শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকার তৃণমূল নেতাদের অনেকেই বিমানবন্দরের বাইরে দলনেত্রীকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যদিও, বোর্ডের দাবিদারদের হুড়োহুড়িতে তাঁদের দূরেই থাকতে হয়। বিমানবন্দরের লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে হেঁটে গাড়িতে ওঠার সময়ে ‘দিদি হামকো বোর্ড চাহিয়ে’ শুনে একবার থমকেও দাঁড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাসিমুখে হাত নেড়ে সকলকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
কালিম্পং থেকে কয়েকশো সমর্থক নিয়ে বিমানবন্দরে এসেছিলেন বিশ্বকর্মা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা-নেত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও চেয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জর্জ খাতি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি জানিয়েছি। তিনি হাত নেড়ে আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন।’’
পাহাড়ে ইতিমধ্যেই সাতটি সম্প্রদায়ের জন্য বোর্ড গঠন করেছে রাজ্য সরকার। লেপচা, তামাঙ্গ, শেরপা, মঙ্গর, ভুটিয়া, লিম্ব, রাই সম্প্রদায়ের জন্যও বোর্ড গঠন হয়েছে। পাঁচটি বোর্ডকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কয়েক কিস্তিতে টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বেশ কয়েকবার বিভিন্ন বোর্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই ম্যাল চৌরাস্তা থেকে তিনটি নতুন বোর্ডের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
থাপা, বিশ্বকর্মা সম্প্রদায়ের জন্যও এ বার পৃথক বোর্ডের দাবি উঠেছে। পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায় মিলিয়ে ১১টি জনজাতি রয়েছে। সব জনজাতির প্রতিনিধিরাই নিজেদের বোর্ডের দাবি তুলে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি পেশ করেছেন। এ দিন বিমানবন্দরে ছিলেন লিম্বু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও। সংগঠনের তরফে অঞ্জন সুব্বা বলেন, ‘‘আমাদের বোর্ড ঘোষণা হয়েছে। দ্রুত বোর্ডের কাজ শুরু করার আর্জি জানিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকে।’’
পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য বোর্ড গঠনকে বিভাজনের রাজনীতি বলেই একাধিকবার অভিযোগ করেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মোর্চার ডাকা বন্ধ উপেক্ষা করেও মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে গিয়ে লেপচা বোর্ডের সভায় যোগ দিয়েছিলেন। এ দিন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বোর্ডের দাবি নিয়ে অবশ্য গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরে মোর্চা নেতারা আপাতত রাজ্য সরকারের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চাইছে না। ইতিমধ্যে দু’বার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন মোর্চা বিধায়করা। এ দিন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছুই বলার নেই। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে এলে তখন তাঁর সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হবে।’’