ফাইল চিত্র
সারদা কেলেঙ্কারিতে এ রাজ্যে থাকা সিবিআইয়ের তিনটি মামলায় আগেই জামিন মিলেছিল। শনিবার চতুর্থ মামলাতেও সারদা সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। দু'লক্ষ টাকার বন্ডে দেবযানীকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এ রাজ্যে থাকা সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআইয়ের সব মামলা থেকেই জামিন পেলেন দেবযানী। তবে এখনই তিনি জেল থেকে বেরোতে পারবেন না। কারণ, অসম এবং ওড়িশায় একটি করে মামলায় এখনও জামিন হয়নি তাঁর।
দেবযানীর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন,"ওড়িশা হাইকোর্টে একটি মামলায় জামিনের আবেদন করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ওই মামলার শুনানি হবে।" বস্তুত, সারদা কেলেঙ্কারিতে দেবযানীর পাশাপাশি সুদীপ্ত সেনও জেলবন্দি রয়েছেন।
দেবযানীর আরেক আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, এই মামলায় জামিনের জন্য ২০২০ সালে আবেদন করা হয়েছিল। কয়েক বার জামিনের আবেদনের শুনানি হয়। সিবিআই দেবযানীর জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই। গত বুধবার সিবিআইয়ের তরফে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয়। কিন্তু অসন্তোষ প্রকাশ করে তা খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে রায় স্থগিত রাখা হয়েছিল। জয়ন্তনারায়ণবাবু জানান, ২০১৩ সাল থেকে তাঁর মক্কেল জেলবন্দি। ২০১৪ সালের পরে তাঁকে জেরা করা হয়নি। ২০১৪ সালের অক্টোবরে দেবযানীর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়। তার পর এখনও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সারদা কেলেঙ্কারিতে প্রভাবশালীদের নাম ছিল। কুণাল ঘোষ-সহ কয়েক জন গ্রেফতার হয়ে জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। আদালতের কাছে দেবযানীর আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, এত বছর পরেও মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। সে ক্ষেত্রে দেবযানীকে অহেতুক জেলবন্দি করে রাখার যৌক্তিকতা নেই।
২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরেই ফেরার হন সারদা কর্তা সুদীপ্ত এবং অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী। পুলিশের দাবি, কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে তাঁদের পাকড়াও করা হয়। পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্ট বৃহত্তর ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনের জন্য তদন্তভার সিবিআইকে দেয়। রাজ্য পুলিশের হাতে থাকা সারদার প্রায় ১৮০টি মামলাকে একত্র করে চারটি ভাগে ভাগ করে সিবিআই এবং চারটি মামলা রুজু করে। তাতে রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী, প্রভাবশালী ব্যক্তি গ্রেফতার হলেও তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
এ দিন দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় বলেন, "মামলার বিচার হবে তা স্বাভাবিক। কিন্তু জামিনের অধিকারও রয়েছে। প্রায় আট বছর হয়ে গিয়েছে। একের পর এক মামলা হয়েছে। কিন্তু জামিন দেওয়া হচ্ছে না। এরপর আরও দুটি মামলা রয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি জামিন মঞ্জুর হবে। আমার মেয়ে বাড়ি ফিরবে।"