—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রহর গুনছিল আমজনতা। তীব্র গরম এবং তাপপ্রবাহের পর অবশেষে স্বস্তি মিলল সোমবার। জেলায় জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় উষ্ণতা কিছুটা কমেছে। কিন্তু ঝড়বৃষ্টিতে প্রাণ হারালেন বাংলার তিন জেলার পাঁচ বাসিন্দা। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়ায় বাজ পড়ে প্রাণ গেল তিন জনের। নদিয়ায় কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক দম্পতির।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝড়বৃষ্টি খানিক থেমে যাওয়ার পরে রাতে আম কুড়োতে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানা ডাঙ্গলসা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু সামন্ত। বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় ৩৫ বছর বয়সি পিন্টুর। বাড়ির পিছনে একটি গাছের তলা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। একই দুর্ঘটনা পুরুলিয়াতেও। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল সোমবার বিকেলে ভিজতে পারে পুরুলিয়া,বাঁকুড়া-সহ দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম অংশের একাধিক জেলা। সোমবার দুপুরের পর থেকে ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। শুরুতে হালকা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি। তার পর শুরু ঝোড়ো হাওয়া। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া খবর, সোমবার বিকেলে আড়শা থানার নামোপাড়া এলাকার তিন পড়ুয়া-সহ স্থানীয় এক ট্র্যাক্টর চালক গ্রামের অদূরে একটি পুকুরে স্নান করতে যাচ্ছিলেন। ঝড় এবং বজ্রপাত শুরু হওয়ায় চার জন রাস্তার ধারের একটি গাছের তলায় আশ্রয় নেন। ওই সময় বাজ পড়ে গুরুতর আহত হন চার জনই। স্থানীয়েরা তাঁদের উদ্ধার করে আড়শা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া রাহুল কুমার (১৯) এবং প্রিয়রঞ্জন মাহাতো (৩০) নামের ট্র্যাক্টর চালককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আহত নবম শ্রেণির ছাত্র যুধিষ্ঠির কুমার এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সুরেশ কুমারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।
নদিয়ার নাকাশিপাড়ার মোটা বড়গাছি এলাকায় ইটভাঁটার অস্থায়ী ছাউনিতে শিশুকন্যাকে নিয়ে থাকতেন শ্রমিক দম্পতি। কালবৈশাখীতে ভাঁটার দেওয়াল পড়ে যায়। তাতে মৃত্যু হয় ওই স্বামী-স্ত্রীর। আহত হয়েছে তাঁদের শিশুকন্যা। দুর্ঘটনায় মোট চার শ্রমিকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। আহতদের উদ্ধার করে বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত দম্পতির বাড়ি ঝাড়খণ্ডে বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের নাম যোগেশ্বর হেমব্রম এবং তালাকুরি হেমব্রম। দু’জনের বয়স যথাক্রমে ২৮ এবং ২৫ বছর।
শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার কামাল বাগদীপাড়া এলাকার বাসিন্দা উন্নতি মাঝির মৃত্যু হয়েছে। প্রায় একই সময়ে কেতুগ্রামের পালিটা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার কিশোরী সুস্মিতা সরেন বজ্রাঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে। চিকিৎসার জন্যে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বোলপুর মহকুমা সদর হাসপাতালে।