এপ্রিল মাসে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিল মূলত পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে। ফাইল চিত্র।
সমস্যা বা আবেদন নথিবদ্ধ করার পরে ২০ দিন— ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে সমাধানের এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হল। মূলত পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে এই পথ নিতে চলেছে নবান্ন। একই কারণে শহরাঞ্চলকে একেবারে বাদ না দিলেও মূলত ভোটের কথা ভেবে পঞ্চায়েতের আওতাধীন তফসিলি জাতি ও জনজাতি প্রধান সব এলাকায় শিবির যাতে হয়, তা দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক অতীতে অন্য জায়গার তুলনায় এই সব এলাকায় ভোটের ফল তৃণমূলের জন্য সন্তোষজনক নয়।
এপ্রিল মাসে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিল মূলত পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে। তাকে আরও কার্যকর করতে এ বার সমাধানের সময়সীমাও নির্দিষ্ট করার কথা ভাবা হয়েছে। সূত্রের খবর, যে শিবিরে প্রথম বার সমস্যা বা আবেদন নথিবদ্ধ করা হবে, তার পরের শিবিরেই বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সময় থাকবে ২০ দিন। জমা হওয়া আবেদনগুলি সম্পর্কে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে সাধারণ মানুষের মন পেতেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।
‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে যে সরকারি শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাতে যে আবেদন বা সমস্যা জমা পড়ে, তার সবই এই রকম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। তবে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো সরকারের ঘোষিত আর্থিক প্রকল্প অনুমোদনের সুযোগ থাকছে। এবং ঝুলিয়ে না রেখে সেগুলির যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে। আবেদনে ভুল সংশোধন, শংসাপত্রের জন্য আটকে থাকা আবেদন ইত্যাদির নিষ্পত্তিতেই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে।
দলীয় স্তরে তৃণমূল কংগ্রেস গ্রামাঞ্চলে ‘দিদির দূত’ পাঠানোর যে কর্মসূচি নিয়েছিল, তা মার্চ মাস পর্যন্ত চলবে। ইতিমধ্যে সেই ‘দূতে’র মাধ্যমে যে তথ্য শাসক শিবিরে পৌঁছেছে তাতে অভাব- অভিযোগ নথিবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি দেখা গেলেও সমাধানে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগও রয়েছে। তবে যে বিষয়গুলি ঝুলে বা আটকে থাকছে তার অনেকটাই আর্থিক কারণে। তবে সংশ্লিষ্ট আবেদনগুলি অনুমোদন পর্যন্ত ছেড়ে দিতে সরকারি দফতরগুলিকে বলা হয়েছে। এক জায়গায় বড় কোনও কাজে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ এড়িয়েই এ কাজ করতে বলা হয়েছে।
এপ্রিল মাসে এই শিবির যখন এগোবে ঠিক সেই রকম কোনও সময়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। ফলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, সরকারি এই উদ্যোগের সঙ্গে দলের রাজনৈতিক প্রচারকে জুড়েই ভোটের বাক্সে ফল পেতে চাইছেন শাসক নেতৃত্ব।