স্মরণ: নিহত রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণের সমাধির কাছে হাজির বহু মানুষ। বুধবার দাড়িভিটে। ছবি: অভিজিৎ পাল
শর্তসাপেক্ষে স্কুল খুলতে দিতে রাজি হল দুই নিহতের পরিবার। স্কুলের দরজার সামনে আর বিক্ষোভে বসবেন না তাঁরা। কিন্তু কী সেই শর্ত? নিহত দুই যুবক রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের পরিবারের লোকজন চাইছেন, ঘটনার সিবিআই তদন্ত এবং গ্রেফতার হওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের মুক্তি। পরিবার সূত্রে বলা হয়েছে, আগামী ১০ নভেম্বর স্কুলের চাবি তুলে দেওয়া হবে জেলাশাসকের হাতে। সেই সঙ্গে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁদের দাবিপত্রও। তবে দাবি না মানা হলে তাঁরা পরে ফের স্কুলের দরজা আটকে বিক্ষোভে বসবেন, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
এ দিন দাড়িভিটে নিহত তাপস বর্মণের বাড়ির সামনে মানববন্ধন করা হয়। সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিল নিয়েই শ্মশানে হাজির হন বহু মানুষ। সেই দলে ছিলেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন, ইসলামপুর টাউন সভাপতি সৌমরূপ মণ্ডল, তৃণমূলের যে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তাপস-রাজেশের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুলেছিলেন, সেই সুবোধ মজুমদার। সুরজিৎ বলেন, ‘‘প্রায় ১৯০০ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয়, তাই স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।’’ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, দাড়িভিটের মানুষ প্রশাসনের কাছে সমাধানের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন প্রশাসনের উচিত সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া। রাজেশের বাবা নীলকমল ও তাপসের বাবা বাদল বলেন, ‘‘স্কুল খোলা হলে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তবে আমাদের দাবি মানা না হলে ফের স্কুলের দরজায় বসতে বাধ্য হব।’’
নিহতদের পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘ওঁদের দাবি নিয়ে আইনের মধ্যে থেকে কোনও সাহায্য লাগলে অবশ্যই করব।’’ সুবোধবাবু বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার পাশেই রয়েছি। আমরা চাই স্কুল খুলুক।’’
অন্য দিকে, আজ, বৃহস্পতিবার দাড়িভিট স্কুল খোলার বিষয়ে সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন ইসলামপুরের মহকুমাশাসক। তবে বৈঠকের আগের দিন স্কুল খোলার জন্য নিহতদের পরিবারের এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে প্রশাসনও।