বিক্ষুব্ধ: ট্রেন দেরিতে চলার জেরে অবরোধ যাত্রীদের। রবিবার, সুভাষগ্রাম স্টেশনে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
সকালের দিকের নির্ধারিত লোকাল ট্রেন আচমকা বাতিল করার প্রতিবাদে রবিবার তিন ঘণ্টারও বেশি সময় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার সুভাষগ্রাম স্টেশনে রেল অবরোধ করলেন ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। এই ঘটনায় দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ে। সাতটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে যায়। বাতিল করতে হয় ৩৬টি লোকাল। চরম সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে বহু পরীক্ষার্থী।
যাত্রীদের অভিযোগ, বারুইপুর থেকে শিয়ালদহমুখী যে ট্রেনটি সকাল ৬টা ৫৮ মিনিটে ছাড়ে, এ দিন আগাম কিছু না জানিয়েই রেল কর্তৃপক্ষ সেই ট্রেনটি বাতিল করেন। এর ফলে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের প্রবল ভিড় জমে যায়। পরের ট্রেনে ভিড়ের মধ্যে ওঠার চেষ্টা করতে গিয়ে এক মহিলা প্ল্যাটফর্মে পড়ে যান বলে অভিযোগ। এর পরেই ওই ট্রেনের মহিলা যাত্রী-সহ নিত্যযাত্রীদের একাংশ লাইনে নেমে অবরোধ শুরু করেন। ৭টা ৫০ মিনিট থেকে শুরু হওয়া ওই অবরোধের জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার সোনারপুর-বারুইপুর লাইন রুদ্ধ হয়ে পড়ে। আটকে যায় ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, লক্ষ্মীকান্তপুর শাখাও। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে একাধিক ট্রেন আটকে পড়ে। দীর্ঘ ক্ষণ অবরোধ চলায় বাতিল হতে শুরু করে একের পর এক ট্রেন।
রেল সূত্রের খবর, শিয়ালদহ-বারুইপুর শাখায় রাতে লাইন মেরামতির কাজ চলছিল। তার জন্য অল্প সংখ্যক ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। ওই মেরামতির কাজের জেরে সকালের দিকে এমনিতেই ট্রেন দেরিতে চলছিল বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এরই মধ্যে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বারুইপুর লোকাল বাতিল হওয়ায় সেই ক্ষোভ চরমে ওঠে। স্টেশন সুপার এবং রেল পুলিশ বার বার যাত্রীদের অবরোধ তুলে
নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও লাভ হয়নি। এ দিন রাজ্য সিভিল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা ছিল। সে কথা জানিয়ে অবরোধকারীদের নিরস্ত করার চেষ্টা হলেও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। ট্রেন দেরিতে চলা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ এতটাই বেশি ছিল যে, বেলা ১১টা নাগাদ স্টেশন সুপারের কাছ থেকে কার্যত মুচলেকা নিয়ে তাঁরা অবরোধ তোলেন।
তবে, তত ক্ষণে শিয়ালদহ-বারুইপুর শাখায় তিনটি ডাউন এবং দু’টি আপ ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। এ ছাড়া, শিয়ালদহ থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর, সোনারপুর, ক্যানিং, বজবজ শাখা মিলিয়ে আরও একাধিক ট্রেন বাতিল করতে হয়। ঘণ্টা তিনেকেরও বেশি সময়
অবরোধ চলায় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় মোট ৩৬টি ট্রেন বাতিল করতে হয় বলে জানিয়েছে রেল। সময় মতো রেক না পাওয়ার কারণে অন্যান্য রুটেও ট্রেন বাতিলের আঁচ গিয়ে পড়ে এ দিন।