সমুদ্রের ধারে কেউ মদ্যপান করে ঘুরছেন কি না, ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে তা পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
বুলবুল চলে গেলেও রেশ রয়ে গিয়েছে সমুদ্রের জলে। তাই ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার পরেও, আজ সোমবার এবং আগামী কাল মঙ্গলবার এই ৪৮ ঘণ্টা দিঘার সমুদ্রে পর্যটকদের নামা নিষিদ্ধ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
রবিবার সকালেই বুলবুল বাংলাদেশে ঢোকার পরই দিঘাতে সমুদ্রে নামার উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার করা হয়। দলে দলে পর্যটক সমুদ্রে নেমে পড়েন। তার মধ্যেই দু’জন পর্যটকের জলে ডুবে মৃত্যু হয়। তাঁদেরই এক জন সঞ্জয় নস্কর। বছর ৪৫-এর সঞ্জয়বাবু দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনের বাসিন্দা। আট বন্ধুর সঙ্গে তিনি বেড়াতে গিয়েছিলেন দিঘাতে। ওল্ড দিঘার গোলার ঘাটে স্নান করতে নেমেছিলেন তাঁরা। সঞ্জয়বাবুর দেহ পুলিশের নুলিয়ারা উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর আগেই খবর মেলে অন্য এক পর্যটকের ডুবে যাওয়ার। নিউ দিঘার ক্ষণিকা ঘাটে স্নান করতে নেমেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বেড়াতে যাওয়া ইন্দ্রনীল মজুমদার। ৪২ বছরের ইন্দ্রনীলবাবুও পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। দিঘা পুলিশ উদ্ধার করে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
পুলিশের দাবি, দু’জনেই মত্ত অবস্থায় জলে নেমেছিলেন। দুই পর্যটকের মৃত্যুর পরই সোমবার সকাল থেকে সমুদ্রতটে নামাই নিষিদ্ধ করে দেয় প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বুলবুল চলে গেলেও এখনও জলে চোরা স্রোত রয়েছে। ফলে সমুদ্র আপাত দৃষ্টিতে শান্ত মনে হলেও তা পর্যটকদের পক্ষে বিপজ্জনক। তাই নিষেধাজ্ঞা।”
এ দিন সকাল থেকেই দেখা যায়, পুলিশ গোটা সমুদ্রতট জুড়ে মাইকে নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করছে। শুধু পর্যটকদের সমুদ্রে নামা নিষিদ্ধ করা নয়, বিচে থাকা সমস্ত অস্থায়ী দোকানপাটও বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেই সঙ্গে সমুদ্রের ধারে লুকিয়ে মদ্যপান করা রুখতে পুলিশকে এ দিন দেখা যায় ব্রেথ অ্যানালাইজার নিয়ে ঘুরতে। আচমকাই তাঁরা হাজির হচ্ছেন কোনও পর্যটকের কাছে, তাঁর পরীক্ষা করছেন ব্রেথ অ্যানালাইজার যন্ত্রে। মদ্যপানের প্রমাণ মিললে সেই পর্যটককে পুলিশ সরিয়ে দিচ্ছে সমুদ্রের ধার থেকে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
আরও পড়ুন: বুলবুলে বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মুখ্যমন্ত্রী, ক্ষত সারাতে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ জেলা প্রশাসনকে
আরও পড়ুন: ১১ প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশে বুলবুল, শক্তি খুইয়ে পরিণত গভীর নিম্নচাপে