ফাইল চিত্র।
আমপান ঝড়ের কারণে কেন্দ্রের কাছে প্রথমে ১ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। যদিও গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিয়ো বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘আমপানে ৩৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে।” সমস্যা হল, প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি নিয়ে মমতা মুখ খোলা সত্ত্বেও কবে রাজ্যের জন্য ত্রাণের অর্থ মঞ্জুর করা সম্ভব হবে তার কোনও দিশা দেখাতে পারছে না কেন্দ্র। সূত্রের মতে, কেন্দ্র মনে করছে রাজ্য যা দাবি করেছে, তাতে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। তাই টাকার অঙ্ক চূড়ান্ত করার আগে, রাজ্যের কাছে কিছু ব্যাখ্যা চাইছে কেন্দ্র। রাজ্যের কাছে সে সংক্রান্ত সদুত্তর পাওয়া গেলে তবেই চূড়ান্ত অর্থ মঞ্জুর করবেন অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামনরা।
গত মে মাসে আমপান ঝড়ে রাজ্যের একটি বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত হয়। ঝড়ের পরেই প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে গিয়ে ১ হাজার কোটি টাকার ত্রাণের ঘোষণা করেন। তার পর ৬ জুন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে যায় কেন্দ্রীয় দল। জমা পড়ে সেই রিপোর্ট। সাধারণত কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট জমা পড়ার পরে তা নিয়ে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত অঙ্ক স্থির করে ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ কমিটি। যারা মূলত কেন্দ্রীয় রিপোর্ট ও রাজ্যের দাবিদাওয়া— এই দুইয়ের মধ্যে বিশ্লেষণ করে ত্রাণের প্যাকেজ হিসেবে একটি অঙ্ক ঠিক করেন।
সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই বৈঠকে বসে ওই কমিটি রাজ্যের ক্ষতিপূরণের দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত তা নির্ণয় করতে ‘জিয়ো ট্যাগিং’-এর সাহায্য নেয়। যার মাধ্যমে বোঝা সম্ভব, কত বাড়ি নষ্ট হয়েছে, কত স্কুলের ক্ষতি হয়েছে, আর কত বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। তার পরে ওই কমিটির পক্ষ থেকে রাজ্যের কাছে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন রাখা হয়। কমে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘আমপানে প্রথমে এক লক্ষ কোটি টাকা চেয়ে এখন ৩৫ হাজার কোটিতে নেমেছে রাজ্য। আমপানে কী সংখ্যক বিদ্যুতের খুঁটি আর বাঁধ ভেঙেছে, সেই অঙ্কের কোনও মাথামুণ্ডু নেই। হিসেবে জল!’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, দাবি নিয়ে এখনও বেশ কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গিয়েছে। তার ব্যাখ্যা পেলেই ফের বৈঠকে বসবে ন্যাশনাল এগজ়িকিউটিভ কমিটি। তাদের ছাড়পত্রের পরেই বিষয়টি চূড়ান্ত মঞ্জুরির জন্য যাবে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির কাছে। যার সদস্য হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় অর্থ ও কৃষিমন্ত্রী এবং নীতি আয়োগের উপাধক্ষ্য। মূলত বছরের মাঝে ও শেষে, মোট দু’টি ধাপে রাজ্যগুলির জন্য বিপর্যয় খাতে অর্থ বরাদ্দ করে থাকে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মত, আগামী মাসের মধ্যে এ বছরের প্রথম ধাপের অর্থ বরাদ্দ সেরে ফেলার পক্ষপাতী কেন্দ্র।