Cyclone Amphan

প্রাক্তন বন্দর-কর্মীর অ্যাকাউন্টেও টাকা

হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামলকুমার আদকের ওয়ার্ডেই গরমিল সামনে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০ ০৪:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

আমপানের ক্ষতিপূরণ শাসকদলের নেতা, কর্মী, তাঁদের পরিজনদের পাইয়ে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসছিল। সেই তালিকায় নয়া মাত্রা জুড়ল হলদিয়া। শিল্পশহরে এক তৃণমূল নেতার পাশাপাশি বন্দরের দুই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীও অন্যায্য ভাবে ঝড়ে বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামলকুমার আদকের ওয়ার্ডেই গরমিল সামনে এসেছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের তালিকা তৈরি করেছে যে দুই সদস্যের কমিটি, সেখানে মহকুমাশাসক এবং পুরপ্রধানের প্রতিনিধি ছিলেন। লিখিত অভিযোগ না-হলেও বিষয়টিতে সিলমোহর দিয়ে হলদিয়ার মহকুমাশাসক অবনীত পুনিয়া বলেন, ‘‘২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সুনীল সামন্ত, সুকেশ বেরা এবং রবীন্দ্রনাথ আদক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। পরে তাঁরা টাকা ফেরতও দিয়েছেন। সমীক্ষক দল কী করে এটা করল, খতিয়ে দেখা হবে।’’

মহকুমা প্রশাসন সূ্ত্রের খবর, বন্দরের প্রাক্তন কর্মী সুনীল সামন্তের অ্যাকাউন্টে গত ৮ জুন ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা ঢোকে। অথচ তাঁর পাকা দোতলা বাড়ির ঝড়ে কিচ্ছুটি হয়নি। সুনীলের ছেলে মলয় সামন্ত বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের আবেদন করিনি। তবে ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকেছে কি না এলাকার তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ আদক ফোন করে জেনেছিলেন। টাকা ফেরত দিতে চাই।’’ আবেদন না করলে কী ভাবে অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রশাসন জানল, ৮ জুন টাকা জমার পরে কেন তাঁরা এত দিন চুপ ছিলেন— প্রশ্ন উঠেছে। মলয়ের দাবি, ‘‘কী ভাবে টাকা ফেরাব, বুঝতে পারেনি।’’

Advertisement

ওই ওয়ার্ডের হাতিবেড়িয়ার বাসিন্দা সুকেশ বেরাও অবসরপ্রাপ্ত বন্দর কর্মী। অভিযোগ, তিনতলা পাকা বাড়ির মালিক সুকেশ পুরনো মাটির বাড়ি দেখিয়ে আবেদন করেন। টাকাও পান। সুকেশের দাবি, ‘‘যে মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা আমারই। তাই ক্ষতিপূরণ আমার প্রাপ্য।’’ যদিও সরকারি নিয়ম বলছে, পাকা বাড়ি থাকলে ক্ষতিপূরণ মিলবে না।

ঘটনায় নাম জড়ানো রবীন্দ্রনাথ আদক তৃণমূলের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি। তাঁরও তিনতলা পাকা বাড়ি। তার পরেও রবীন্দ্রনাথের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা জমা পড়েছে বলে অভিযোগ। তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বারবার ফোন কাটেন তিনি। মহকুমা প্রশাসনের তরফে যে তালিকা হয়েছিল, তাতে ৪,৩০০ জনের নাম আছে। বর্তমানে পুর-এলাকায় ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের সংখ্যা ৬০০। ওই তালিকা পুরসভা ‘স্ক্রুটিনি’ও করেছে। তা-ও গরমিল? পুরপ্রধান শ্যামলকে ফোন করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।

হলদিয়ার বাম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের মতে, ‘‘এখন চাপে পড়ে টাকা ফেরত দিতে চাইছেন। সত্যি ফেরাবেন কি না, কেউ জানে না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী অবশ্য বলছেন, ‘‘ভুলবশত কেউ টাকা পেলে তাঁকে ফেরত দিতে হবে। দল এ সব বরদাস্ত করবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement