—ফাইল চিত্র।
সামুদ্রিক ঝড়ের হাত থেকে উপকূলীয় বঙ্গকে রক্ষা করে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য। কিন্তু আমপানের ধাক্কায় সেই রক্ষণপ্রাচীরের বহু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি, অরণ্যের ভিতরে টহলদারির জন্য যে খাঁড়িপথ তাও গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে বন দফতরের খবর। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে দেখা গিয়েছে, ম্যানগ্রোভ অরণ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু খাঁড়ি গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ বন দফতরের খবর, এই বিপর্যয় কাটলে অদূর ভবিষ্যতে জঙ্গলে টহলদারির নতুন খাঁড়িপথও চিহ্নিত করতে হবে।
পরিবেশবিদদের প্রশ্ন, অরণ্যের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতি হলে তা যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠেকানোর ক্ষেত্রে বিপদ বাড়াবে তেমনই বাস্তুতন্ত্রেরও ক্ষতি হবে। রবিকান্ত জানান, বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি এত দ্রুত পরিমাপ করা যাবে না। সেটা সময়সাপেক্ষ। তবে তাও করা হবে। বনকর্তাদের অনেকে বলছেন, সুন্দরবনের জনজীবনেরও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। তার প্রভাবও কিন্তু অচিরে অরণ্যের উপরে পড়বে। ফলে সে দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
বন দফতর জানায়, আমপানের প্রভাবে ভগবৎপুর কুমির প্রজনন কেন্দ্র, ঝড়খালি বন্যপ্রাণ উদ্ধার কেন্দ্র-সহ প্রায় সব বন দফতরের অফিস ও ক্যাম্পের ক্ষতি হয়েছিল। এর পাশাপাশি ১৩২ কিলোমিটারের মতো জঙ্গল ঘেরার নাইলন জাল ছিঁড়েছে। বন দফতরের প্রায় সব রেঞ্জ, বিট এবং ক্যাম্প অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। সেগুলি সারাইয়ের কাজও শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে দুর্যোগের রাত থেকেই ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করেছেন বনকর্মীরা। ছিলেন পদস্থ অফিসারেরাও। বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা পাওয়ার পরেই হাজার পাঁচেক লোকের দিন চারেকের ত্রাণ মজুত করে রাখা হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: দাঙ্গাহাঙ্গামা নিয়ে অমিতকে পাল্টা বিঁধলেন অভিষেক
আরও পড়ুন: রবিবার দিনভর বিক্ষিপ্ত ঝড়-বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়
তবে অনেকে বলছেন, সুন্দরবনে আমপান যা ক্ষতি করেছে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। আয়লার পরেও অরণ্য ও জীববৈচিত্রের উপরে কুপ্রভাব পড়েছিল। স্বাভাবিক পেশা হারিয়ে অনেকেই নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ ধরা কিংবা কাঠপাচার, চোরাশিকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। এবারে তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে অতি-তৎপর হতে হবে বন দফতরকে।