ছবি পিটিআই।
আমপানের ১১ দিন পরেও বহু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ নেই। সরকারি সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৫ লক্ষের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছেন না। সমস্যা স্বীকার করে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিপর্যয়ের মাত্রা অত্যন্ত বড়। কিছু সমস্যা রয়েছে। তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’
২০ মে ঝড়ের দাপটে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ওই সব জেলায় অধিকাংশ সাবস্টেশন অকেজো হয়ে পড়ে। কয়েক লক্ষ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন জেলা থেকে বিদ্যুতের খুঁটি, তার ও কর্মীদের বিপর্যস্ত এলাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। দফতরের কর্তাদের কথায়, লকডাউন চলায় পরিবহণ ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক নয়। বিভিন্ন জেলা থেকে বিদ্যুতের খুঁটি বিপর্যস্ত এলাকায় পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে লোকের অভাব। মূলত এই দু’টি কারণে বিপর্যস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: শৌচাগার জলের তলায়, রাতের অপেক্ষায় সীতারা
সুন্দরবন এলাকার কাকদ্বীপ মহকুমায় পাথরপ্রতিমা, সাগর এলাকায় শুধু বিদ্যুতের খুঁটি বা ট্রান্সফর্মার নয়। কিছু জায়গায় হাইটেনশনের টাওয়ারও উপড়ে গিয়েছে। ওই সব এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা যায়নি। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রায় সব এলাকাতেই প্রতিদিন বিক্ষোভ চলছে। স্থানীয় ঠিকাদারদের দিয়ে অস্থায়ী ভাবে মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ সংস্থার অধীনে থাকা ঠিকাদারদের একাংশের দাবি, শুধু কর্মীর অভাব নয়। বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে খুঁটি ও নানা যন্ত্রাংশ বহু ক্ষেত্রেই অমিল। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই ওইসব খুঁটি ও যন্ত্রাংশ হাতে না-আসায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। প্রাথমিক পর্যায়ে গাছ কাটার কাজ করা হয়েছে। এমনকি বিদ্যুতের খুঁটি না-পাওয়ায় অস্থায়ী ভাবে গাছ কেটে খুঁটি তৈরি করে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে। দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ না-থাকায় অধৈর্য হয়ে পড়ছেন গ্রাহকেরা। কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনা ঘটছে। বহু কর্মী আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় কাজ করতে চাইছেন না। এটাও একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও মাস দুয়েক লাগতে পারে বলে মনে করছে দফতর।
দফতর সূত্রের খবর, কিছু এলাকায় ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে নিচুতলার কর্মীদের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কোথাও নতুন বদলি হয়ে আসা ইঞ্জিনিয়াররা এখনও এলাকায় সড়গড় হতে পারেননি। ফলে ঠিকাদার সংস্থার উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে। এটিও একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।