—প্রতীকী চিত্র।
হাত থেকে সাধের মোবাইল ফোন পড়ে গেল। তুলে নিয়ে দেখলেন, স্ক্রিনে চিড় খেয়েছে। চোখের নিমেষেই দেখলেন, চিড় খাওয়া স্ক্রিন নিজে নিজেই জুড়ে গেল! এ কি ম্যাজিক? নাকি কল্পবিজ্ঞান?
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-কলকাতা এবং খড়্গপুর আইআইটির বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, কেলাসের (ক্রিস্টাল) নিজস্ব মেরামত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এমন হতে পারে। এ নিয়ে একটি গবেষণাপত্রও ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন তাঁরা। গবেষণাপত্রের শিরোনামেও কেলাসের এই ‘ম্যাজিকের’ উল্লেখ করেছেন তিনি।
আইসার-কলকাতার দুই অধ্যাপক সি মল্ল রেড্ডি, নির্মাল্য ঘোষ এবং খড়্গপুর-আইআইটির অধ্যাপক ভানুভূষণ খাটুয়ার অধীনে এই গবেষণা হয়েছে। গবেষকদলের বক্তব্য, কেলাসের এই চরিত্রের ফলে মোবাইল ফোনের মতো দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস যেমন উন্নত হতে পারে, তেমনই মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার হতে পারে।
এই গবেষণার সূত্রপাত অধ্যাপক রেড্ডি এবং তাঁর গবেষক-ছাত্র সুরজিৎ ভুঁইয়ার হাত ধরে। তাঁরাই প্রথমে কেলাসের এই স্ব-মেরামতি লক্ষ্য করেন। তাঁরা দেখেন, বল প্রয়োগ করে কোনও কেলাসকে ভাঙা বা চিড় ধরানো হলে তা ফের নিজে নিজে জুড়ে যাচ্ছে। অনেকটা মানব শরীর যেমন নিজেই ক্ষত মেরামত করে তেমনই ভাবেই নিজেই মেরামত করছে কেলাস। এ ব্যাপারে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যুক্ত হন অধ্যাপক ঘোষ এবং তাঁর ছাত্র শুভম চান্দেল। আইআইটিতে অধ্যাপক খাটুয়া এবং তাঁর সুমন্তকুমার করণ লক্ষ্য করেন, এই কেলাসগুলি যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতেও রূপান্তরে সক্ষম। যাকে বলা হয় ‘পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি’।
গবেষকদের মতে, বর্তমানে মোবাইল ফোন-সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করার পদ্ধতি (পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি) ব্যবহার করা হয়। সেখানে পিয়েজো-ইলেকট্রিক ক্রিস্টাল ব্যবহার করলে যন্ত্রটি উন্নত এবং দীর্ঘমেয়াদি হবে। শুধু তাই নয়, রোবট এবং মহাকাশযানের ক্ষেত্রেও কেলাসের এই স্ব-মেরামতি বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ, সেগুলিতে নিত্য রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব নয়।crys