সর্ষে-আলুর চাষে আকাল ইউরিয়ার

পর্যাপ্ত ইউরিয়ার অভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ইউরিয়ার কালোবাজারি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে কৃষি দফতর।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

রবি মরসুমে ইউরিয়া সারের সঙ্কটের কবলে রাজ্য। চলতি মাসে যে-পরিমাণ ইউরিয়া আসার কথা, তার অর্ধেক পেয়েছে কৃষি দফতর। ফলে সর্ষে ও আলুর বীজ বোনার পরে প্রথম দফার ইউরিয়া জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন চাষিরা। পর্যাপ্ত ইউরিয়ার অভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ইউরিয়ার কালোবাজারি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে কৃষি দফতর।

Advertisement

ইউরিয়া-সঙ্কটের বিষয়টি কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক, রেল বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় সার ও রসায়ন মন্ত্রককে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি বলে রাজ্যের কৃষি দফতরের কর্তাদের অভিযোগ। তাঁদের একাংশ জানান, ডিসেম্বরে রাজ্যেদেড় লক্ষ টন ইউরিয়ার প্রয়োজন ছিল। রাজ্য পেয়েছে ৭৮ হাজার টন। পশ্চিমবঙ্গে ইউরিয়া আসে মূলত অন্ধ্রপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ থেকে। ওই দুই জায়গা থেকে রেলের রেক পাওয়া যাচ্ছে না। আমদানি করা ইউরিয়া বাংলায় আসে বিশাখাপত্তনম, কাকিনাড়া, মুম্বই বন্দর থেকেও। কিন্তু বন্দর থেকে তা বহনের জন্য রেকের সমস্যা হচ্ছে।

সার ও রসায়ন মন্ত্রকের তরফে অবশ্য বলা হয়েছে, দেশে ইউরিয়ার সঙ্কট নেই। রবি মরসুমে সারা দেশেই ইউরিয়ার চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। সেই জন্যই সর্বত্র তা পাঠাতে গিয়ে রেলের রেক পেতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে অচিরেই সঙ্কট কেটে যাবে।

Advertisement

যদিও রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার বলার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার সমস্যা মেটাতে এগিয়ে আসছে না। ফলে ইউরিয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে।’’

কৃষি দফতর জানাচ্ছে, অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজ্যে সাড়ে সাত লক্ষ টন ইউরিয়ার প্রয়োজন হয়। এই সময় সর্ষে, আলুর ব্যাপক চাষ তো হয়ই। জানুয়ারি থেকে বোরো ধান চাষেও ইউরিয়া লাগে। কিন্তু অক্টোবর থেকে চাহিদা অনুযায়ী ইউরিয়া আসছিল না। আর ডিসেম্বরে সেই সঙ্কট বেড়েছে। কৃষি দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, জানুয়ারি-ফ্রেব্রুয়ারিতে পরিস্থিতি একই রকম থাকলে বোরো চাষিরা সমস্যায় পড়তে পারেন। পরের দু’মাসেও দেড় লক্ষ টন করে ইউরিয়া লাগবে। কিন্তু তা চাষিদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া যাবে কি না, সেই বিষয়ে সংশয় আছে কৃষিকর্তাদের। কালোবাজারির খবরে তাঁদের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। তবে কৃষিমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘‘সরকার কালোবাজারি রুখতে ব্যবস্থা নেবে।’’

মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে সদ্য ক্ষমতায় আসা দুই মুখ্যমন্ত্রী ইউরিয়ার এই সঙ্কট নিয়ে ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কামান দেগেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্নও এ বার সেই পথে যেতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।‌

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement