ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটের আগে কেন শুধু যুব সংগঠনের নামে ব্রিগেড সমাবেশ ডাকা হল, তা নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ জানাল সিপিএমের ছাত্র-ব্রিগেড এসএফআই। সিপিএম সূত্রের খবর, গত শনিবার বাগুইআটিতে দলের যে স্থায়ী পার্টি স্কুল রয়েছে, সেখানে বসেছিল ছাত্র ফ্র্যাকশন কমিটির বৈঠক। যেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রফ্রন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজন চক্রবর্তী। জানা গিয়েছে, সুজনের সামনেই একাধিক জেলার এসএফআই নেতা প্রশ্ন তোলেন, কেন ‘একক’ ভাবে যুব সংগঠন ব্রিগেড সমাবেশ করবে? কেন ছাত্র-যুব যৌথ ব্রিগেড করা গেল না? গত দু’সপ্তাহে এসএফআই রাজ্যের ২০টি জেলায় আড়ে-বহরে বড় মিছিল করেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে ছাত্র নেতৃত্ব প্রশ্ন তোলেন, যখন ছাত্র সংগঠন রাস্তায় থেকে আন্দোলন করছে, তখন ব্রিগেড থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করা হল কেন?
সিপিএম সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনা, কোচবিহার, মালদহ, হুগলি এবং কলকাতার একটি অংশ-সহ দলের ফ্র্যাকশন কমিটির বৈঠকে ছাত্র নেতৃত্ব বলেন, দল বলছে তারুণ্যের ব্রিগেড। ছাত্ররা কি তারুণ্যের মধ্যে পড়ে না? সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্রনেতাদের ক্ষোভের সামনে সুজন বৈঠকে বলেন, হৃদয়টাকে বড় করতে হবে। এ ভাবে ‘সঙ্কীর্ণ’ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে হবে না। যুবর নামে হলেও আসলে সমগ্র পার্টিকেই ব্রিগেড ভরাতে উদ্যোগ নিতে হবে। সেখানে ছাত্রফ্রন্টেরও দায়িত্ব রয়েছে।
সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের প্রতিষ্ঠাদিবস আগামী ৩ নভেম্বর। ওই দিন কোচবিহার থেকে ‘ইনসাফ যাত্রা’ শুরু করছে তারা। দু’মাস ধরে রাজ্যের সমস্ত জেলা ছুঁয়ে এসে ৭ জানুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে হবে সমাপ্তি সমাবেশ। ইতিমধ্যেই সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক থেকে সব জেলা কমিটিকে বলে দেওয়া হয়েছে, যুবদের ব্রিগেড ভরাতে শাখা স্তর থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। সিপিএমের যুব সংগঠনটি তাদের সাংগঠনিক রেওয়াজ অনুযায়ী ‘ইনসাফ যাত্রা’ ও ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করে অর্থসংগ্রহও শুরু করেছে। এখানেও ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে অদৃশ্য সংঘাত বেধে গিয়েছে বলে খবর। এসএফআইয়ের সব জেলার সম্মেলন আসন্ন। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মাঝামাঝির মধ্যে সেগুলি শেষ করতে হবে। তার পর জানুয়ারির ২৫, ২৬ এবং ২৭ তারিখ মালদহে হবে রাজ্য সম্মেলন। ছাত্র নেতৃত্বের বক্তব্য, যুব সংগঠন তাদের কর্মসূচির জন্য অর্থ তুলতে শুরু করায় ছাত্র সংগঠন জেলা সম্মেলনগুলির জন্য অর্থসংগ্রহ করতে পারছে না। এমনকি, ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের জেলা পশ্চিম বর্ধমানের ছাত্র নেতৃত্বও এই সমস্যা নিয়ে অনুযোগ জানিয়েছেন বলে খবর।
লোকসভা ভোটের আগে কেন দল বা বামফ্রন্টের নামে ব্রিগেড না করে যুব সংগঠনের নামে ব্রিগেড ডাকা হল, তা নিয়ে সিপিএমের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। জানা গিয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যমগ্রামে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সাধারণ সভাতেও একই প্রশ্ন উঠেছিল। সেখানেও বক্তা ছিলেন সুজন। এর আগে বাম শরিক দলগুলির ছাত্র-যুব সংগঠনগুলিও প্রশ্ন তুলেছিল, কেন ভোটের আগে ‘একক’ ভাবে সিপিএমের যুব সংগঠন ব্রিগেডে সভা করছে তা নিয়ে। এ বার সেই প্রশ্ন তুলল ‘ভ্রাতৃপ্রতিম’ এসএফআইও।