আনিস খানের ‘খুনিদের শাস্তি’ এবং এসএসসি উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিতে মিছিলে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। ফাইল চিত্র।
পুরসভা ভোট এবং বিধানসভার উপনির্বাচনে সাম্প্রতিক কালে দলের ভোট বেড়েছে। ছাত্র ও যুব সংগঠনের রাস্তায় নেমে লড়াইও নজর কাড়ছে। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়ে রাজ্য রাজনীতির বিরোধী পরিসরে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো ও বিজেপিকে আরও কোণঠাসা করার লক্ষ্য নিয়ে সংগঠনকে সাজাতে চাইছে সিপিএম। রাজ্য কমিটির পরে এ বার তাদের নজর রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। জেলা থেকে আরও কিছু মুখকে জায়গা করে দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সেই সঙ্গেই তাদের লক্ষ্য, রাজ্য কমিটির মতোই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর গড় বয়সও কমিয়ে আনা।
সিপিএমের নতুন রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক শুরু হচ্ছে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে। রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য কমিটি তৈরি হওয়ার পরে এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈঠক, যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে দ্বিতীয় বৈঠক। আরও আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির পাশাপাশি নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীও এ বারের বৈঠকে গড়ে ফেলা হবে বলে দলীয় সূত্রের খবর। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মৃদুল দে, রবীন দেব, অশোক ভট্টাচার্য ও মিনতি ঘোষ— বিদায়ী রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এই ৬ জন সদস্য বয়স-নীতি মেনে এ বার রাজ্য কমিটি থেকে সরে গিয়েছেন। তাঁদের পরিবর্তে কারা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে জায়গা পাবেন, তা নিয়েই চর্চা চলছে দলে।
সদ্যসমাপ্ত পার্টি কংগ্রেসে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়া বাঁকুড়ার জনজাতি নেত্রীকে এ বার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও দেখা যেতে পারে বলে দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত। অশোকবাবুর জায়গায় আসার সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের এক নেতার। মুর্শিদাবাদ থেকে এক জন এবং কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মহিলা মুখও আনা হতে পারে বলে সূ্ত্রের খবর। নতুন রাজ্য সম্পাদক হিসেবে মহম্মদ সেলিম দায়িত্ব নেওয়ার পরে দলকে আরও গতিশীল করার চেষ্টা করছেন। সেই সামগ্রিক প্র্য়াসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী তৈরি হবে বলে দলীয় সূত্রের অভিমত। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার সম্পাদক শমীক লাহিড়ী ও সুমিত দে কেন্দ্রীয় কমিটিতে চলে যাওয়ায় তাঁদের জায়গায় নতুন দুই জেলা সম্পাদক বেছে নেওয়ার ভাবনাও রয়েছে। তবে সরাসরি রাজ্য কমিটিতে সেই কাজ না করে সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির বৈঠক ডেকেও সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে।
এর মধ্যে সিপিএম বা তাদের গণসংগঠনগুলির পথে নেমে প্রতিবাদও অব্যাহত। ছাত্র-নেতা আনিস খানের ‘খুনিদের শাস্তি’ এবং এসএসসি উত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিতে বুধবার মৌলালি থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মিছিল করেছে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। যুব সংগঠনের মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, কলতান দাশগুপ্ত, ছাত্র নেতা ময়ূখ বিশ্বাস, সৃজন ভট্টাচার্যেরা পথে নেমে ফের জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিচারের’ দাবিতে তাঁদের লড়াই চলবে।