বেশ কিছু দিন ঘরছাড়া থাকার পরে দিন দুয়েক আগে গ্রামে ফিরেছিলেন সিপিএম কর্মী। সেই সুযোগে হামলা চালিয়ে তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বামেদের দাবি, ভোটের ফল বেরনোর পরে শাসক দলের ‘সন্ত্রাসে’ এ পর্যন্ত তাঁদের সাত জনের প্রাণ গিয়েছে। বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কুলশুনো গ্রামের রফিকুল হাসানকে (৫৫) ধরে সংখ্যাটা দাঁড়াল আট।
মোটরবাইকে অফিসে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার আক্রান্ত হন জেলা পরিষদের কর্মী রফিকুল। অভিযোগ, তাঁকে এবং ইসমাইল শেখ নামে আর এক সিপিএম কর্মীকে গ্রামের রাস্তায় গাঁইতি, শাবল দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। দু’জনকেই প্রথমে কাটোয়া হাসপাতাল, পরে বর্ধমানে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার বর্ধমানের এক নার্সিংহোমে রফিকুলের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই অশান্ত হয়ে ওঠে কুলশুনো গ্রাম। সিপিএম-তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষ, বোমাবাজি বাধে। জখম হন কয়েক জন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের অভিযোগ, “রফিকুল ভোটে দলের হয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করেছিলেন। তাই তাঁকে ঘরছাড়া হতে হয়। গ্রামে ফিরতেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করল।’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল ভোটে বিপুল ভাবে জিতেছে, সেটা মেনে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন ফরমান হয়েছে, সকলকে মাথা নত করে চলতে হবে। না হলে, সে মাথা কেটে নেওয়া হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমন ঘটনা জেলায়-জেলায় চলছে। মানুষ এটা মেনে নেবেন না।’’
সিপিএমের অভিযোগ, গ্রাম দখলের চেষ্টায় গোলমাল পাকাচ্ছে তৃণমূল। রফিকুলের ভাগ্নে মনসুর হাবিবের অভিযোগ, “ঘরে ফিরতে হলে মোটা টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে তৃণমূলের লোকেরা। মামা দিতে চাননি। তাই তাঁর উপরে হামলা হল।” গ্রামের তৃণমূল নেতা নাজির শেখ-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। বুধবার রাত কেউ গ্রেফতার হয়নি। নাজিরের অবশ্য দাবি, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই কাণ্ড।’’ এ দিন নিহতের বাড়ি গিয়ে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক রং দেখা বিধায়কের কাজ না। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’