রাহুলের মন বুঝতে ভার ইয়েচুরিকেই

বিজেপির ‘বিপদে’র সমকক্ষ আর কোনও দলই নয়। আর বাংলায় বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই বাম-কংগ্রেসের ভোটকে এক জায়গায় আনতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩০
Share:

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।—ফাইল চিত্র।

বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ায় যেতে কোনও বাধা নেই। তবে অপেক্ষা কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করার। জেলার নেতাদের ডেকে এই বার্তা পরিষ্কার করে দিয়েই লোকসভা আসন ধরে পরিস্থিতি সংক্রান্ত লিখিত মতামত চাইলেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেসের মনোভাব বুঝতে সরাসরি রাহুল গাঁধীর সঙ্গেই সামনের উৎসব মরসুমের পরে কথা বলতে যাবেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

Advertisement

প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে রবিবার সকালে রাজ্য কমিটির বর্ধিত বৈঠকে দলের সব জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও গণসংগঠনের নেতৃত্বের কাছে ইয়েচুরি এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ব্যাখ্যা করেছেন, বিগত পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত রাজনৈতিক লাইন অনুযায়ী ‘সমদূরত্বে’র কৌশলের আর কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। বিজেপির ‘বিপদে’র সমকক্ষ আর কোনও দলই নয়। আর বাংলায় বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলের বিরুদ্ধেও লড়তে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই বাম-কংগ্রেসের ভোটকে এক জায়গায় আনতে হবে। বস্তত, কংগ্রেসকে চাপে রাখার লক্ষ্যেই ইয়েচুরি তাদের নাম না-করে ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বামেদের ব্রিগে়ড সমাবেশে সমমনোভাবাপন্ন অন্যান্য দলকেও ডাকা হবে।

তৃণমূলের ১৯ জানুয়ারির ব্রিগে়ড সমাবেশে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে শনিবার দিল্লির বৈঠকে রাহুল স্পষ্ট করে বলেননি তাঁরা ওই আমন্ত্রণে সাড়া দেবেন কি না। বাংলায় নির্বাচনী সমঝোতার প্রশ্নেও রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বকে আগে মনস্থ করতে বলেছেন রাহুল। এই অবস্থায় সিপিএম পাল্টা চাপ রাখারই কৌশল নিয়েছে। জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ দিন মহাজাতি সদনে কার্ল মার্ক্সের দ্বিশতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও লোকসভা ভোট নিয়ে তাঁদের মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছেন ইয়েচুরি, সূর্যবাবুরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: জোট-কথা নবীনের সঙ্গে, আজ নবান্নে কে চন্দ্রশেখর রাও

কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁরা কি আসন সমঝোতা করবেন? পরে এই প্রশ্নের জবাবে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমরা তো বলছি, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব ভোটকে একত্রিত করতে চাই। কংগ্রেস কখনও বলছে বাংলায় তারা একা লড়বে, কখনও বলছে সমঝোতা করবে। কী করবে, ঠিক হোক!’’ মমতার ব্রিগে়ডে বামেরা যাবে না। বামেদের ব্রিগেডে কী কংগ্রেসকে ডাকা হবে? ইয়েচুরির জবাব, ‘‘বিজেপিকে পরাস্ত করার বার্তা দিতে সমাবেশ। সেখানে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে সমমনোভাবের অন্য কিছু দলকেও ডাকার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। কাদের ডাকা হবে, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা, মমতার ব্রিগেডে কংগ্রেস কী করে, তা দেখে নিয়েই তাঁদের আমন্ত্রিতের তালিকা চূড়ান্ত করবেন সূর্যবাবুরা।

দিল্লিতে একটি কর্মসূচিতে রাহুলের সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছিল ইয়েচুরির। সিপিএম সূত্রের খবর, বড়দিনের উৎসবের পরে ইয়েচুরির সঙ্গে কথা বলতে পারেন কংগ্রেস সভাপতি। তখনই বাংলা নিয়ে কংগ্রেসের ভাবনা জেনে নেওয়ার ভার ইয়েচুরিকে দিয়েছে দল।

জেলার নেতাদের কাছেও আসনভিত্তিক রিপোর্ট এবং মতামত চেয়েছে আলিমুদ্দিন। কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত বোঝাপড়ায় আগ্রহী না হলে দলকে একা লড়ার জন্য মানসিক ও সাংগঠনিক ভাবে তৈরি রাখতে চাইছেন সূর্যবাবুরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement