CPM

CPM: সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে লাগাম দিতে চায় সিপিএম

রাজ্য স্তরে ইতিমধ্যেই কিছু বাধানিষেধ প্রয়োগ করা শুরু করেছে সিপিএম।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২১ ০৭:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

নির্বাচনে বেনজির বিপর্যয়। সংগঠনের হালও সঙ্গিন। অথচ এর মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে নানা বিতর্কে নাম জড়িয়ে যাচ্ছে দলের নেতাদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক মাধ্যমের জন্য দলে আচরণবিধি ঠিক করে দিচ্ছে সিপিএম। কেন্দ্রীয় স্তর থেকেই এই নির্দেশিকা বেঁধে দেওয়া হবে দলের নেতা-কর্মীদের জন্য।

Advertisement

সামাজিক মাধ্যম ছাড়া আজকের দিনে প্রচারের কাজ প্রায় অচল। অতিমারি পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল যোগাযোগে আরও বেশি ভরসা করতে হয়েছে সব দলকেই। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল রাখার পাশাপাশি নানা বিতর্কও বিড়ম্বনায় ফেলেছে সিপিএমকে। সাম্প্রতিক কালে দলের পরিচিত নেতাদের একাংশ সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, যা দল অনুমোদন করে না বলে পরে জানাতে হয়েছে। এই সমস্যায় রেশ টানতেই সামাজিক মাধ্যমে কী ধরনের প্রচার চলবে আর কোনটা চলবে না, তার রূপরেখা ঠিক করে দিতে চাইছে সিপিএম। বস্তুত, বছরদুয়েক আগেই এই সংক্রান্ত রূপরেখা সিপিএমে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা যে ঠিকমতো কার্যকরী হয়নি, একাধিক ঘটনাতেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। এ বার কেন্দ্রীয় স্তরে সেই রূপরেখা আরও স্পষ্ট করে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৬ থেকে ৮ অগস্ট সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক বসতে চলেছে। সেখানে আসন্ন সম্মেলন-পর্বের নির্ঘণ্ট ঠিক হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

রাজ্য স্তরে ইতিমধ্যেই কিছু বাধানিষেধ প্রয়োগ করা শুরু করেছে সিপিএম। দলের নেতাদের যেমন বার্তা দেওয়া হয়েছে, ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে ‘ফ্যান পেজ’-এর নামে যা খুশি পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থাকায় কোনও সমস্যা নেই কিন্তু বিভিন্ন পেজ খুলে ‘যথেচ্ছাচার’ চলবে না। মন্তব্য বা বিবৃতি হবে দলের অবস্থানের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। তার পর থেকে নেতাদের কেউ কেউ নিজেদের উদ্যোগেই ‘সমর্থক অ্যাকাউন্ট’ বন্ধ করে দিচ্ছেন।

Advertisement

তবে সমস্যা যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তার সর্বশেষ ইঙ্গিত মিলছে কেরল থেকে। মলপ্পুরম জেলায় পাচিরি মহাবিষ্ণু মন্দিরের অদূরে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ছবি দিয়ে একটি বড় ফ্লেক্স লাগানো হয়েছিল। কারা ফ্লেক্স দিয়েছে, তার কোনও উল্লেখ ছিল না। তবে সেখানে লেখা ছিল, ‘‘আপনি জানতে চাইলেন, ভগবান কে? মানুষ উত্তর দিল, খাবার যে জোগায়, সে!’’ এই ফ্লেক্সের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বাম সমর্থকেরা। কেরলের কংগ্রেস বিধায়ক ভি টি বলরাম এমন প্রচার নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেই প্রশ্ন তোলেন। বিতর্কের মুখে সামাজিক মাধ্যমে ওই প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। যদিও সিপিএমের মলপ্পুরম জেলা সম্পাদক ই এন মোহনদাস বলেছেন, ‘‘ওই ফ্লেক্সের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক ছিল না। দল ওই ফ্লেক্স লাগায়নি। তবে দলের কাউকে এই নিয়ে প্রচার বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’’ মূল ফ্লেক্সটিও এখন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘সামাজিক মাধ্যম এখন প্রচারের ক্ষেত্রে অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার। কিন্তু সেই হাতিয়ার ব্যবহারে সতর্ক না হলে নানা বিপত্তি বাধবে। সতর্কতা তাই দলের সকলকেই অবলম্বন করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement