সামনে উৎসবের মরসুম। তার পরেই শুরু হয়ে যাবে দলের সম্মেলন প্রক্রিয়া। তার আগে সংগঠনকে চাঙ্গা রাখতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে পথে নামছে সিপিএম। সেই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য অবশ্যই গ্রামাঞ্চল। কারণ, কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন।
সাম্প্রতিক কালে অন্তত ১৪টি পুরসভার ভোট, একটা করে লোকসভা ও বিধানসভা উপনির্বাচনে বামেদের ফল হয়েছে শোচনীয়। বিজেপি-র কাছে দ্বিতীয় স্থান খুইয়ে তাদের নেমে যেতে হয়েছে তৃতীয় স্থানে। পুরভোটে শাসক দলের দাপটের মোকাবিলায় কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেননি সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। রাজ্য কমিটির বৈঠকে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে ফের বলতে হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতার আশা বা নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার ভরসায় বসে থেকে কোনও লাভ নেই। বুথ স্তরে সাংগঠনিক কমিটি গড়ে প্রতিরোধ করাই একমাত্র রাস্তা। তবে ভোটের দিনে যে দল বুথ আগলাতে পারছে না, মাঠে-ময়দানে তাদেরই কর্মসূচিতে কিন্তু ভিড় হচ্ছে! এই বৈপরীত্য আলিমুদ্দিনকেও ভাবিয়ে তুলেছে। আপাতত উৎসব এবং সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরুর আগে মাঠে-ময়দানে নেমেই ভাঙা সংগঠনকে ধরে রাখতে চাইছে তারা।
কৃষকদের দাবি-সহ একগুচ্ছ বিষয়কে সামনে রেখে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সব জেলা সদরে ধর্না-অবস্থানের ডাক দিয়েছে সিপিএম। ওই কর্মসূচিকে ঘিরে জেলায় জেলায় বড় জমায়েত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। কোনও কোনও জেলায় ১১-র বদলে দু-এক দিন পরেও জমায়েত হবে। কলকাতার ক্ষেত্রে ওই কর্মসূচিই পাল্টে হবে ‘লালবাজার অভিযান’। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে জমায়েত করে ১৩ তারিখ লালবাজারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবে বাম সংগঠনগুলি। সে দিন আবার বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের শহরে থাকার কথা। অমিতের উপস্থিতিতে রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করে দেখাতে চাইছে কলকাতা জেলা সিপিএম। তবে জমায়েত স্থলের অনুমতি নিয়ে সমস্যা হলে রানি রাসমণির বদলে অন্যত্র জড়ো হয়ে লালবাজারের দিকে মিছিল হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর।
পুজো-মহরম মিটে গেলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে শুরু হবে পদযাত্রা। সরাসরি সিপিএমের পতাকা নিয়ে না করে ওই কর্মসূচি হবে গণসংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ বিপিএমও-র উদ্যোগে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি পরিক্রমা করে আগামী ১ নভেম্বর পদযাত্রার সমাপ্তি সমাবেশ হবে শিলিগুড়িতে। দক্ষিণবঙ্গের পদযাত্রা শেষে কলকাতায় জমায়েত ৩ নভেম্বর। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘অক্টোবরের শেষ থেকেই শাখা স্তরে সম্মেলন শুরু। ওই প্রক্রিয়া শেষ হবে ফেব্রুয়ারির শেষে রাজ্য সম্মেলন দিয়ে। তার মধ্যেই রাস্তায় যা যা আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া সম্ভব, নেওয়া হচ্ছে।’’